৯ম-১০ম শ্রেণি বাংলা সাহিত্য।পল্লিসাহিত্য সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

৯ম-১০ম শ্রেণি বাংলা সাহিত্য – পল্লিসাহিত্য সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

পল্লী সাহিত্য গল্পের মূলভাব এর সকল সৃজনশীল বিষয়বস্তু বিস্তারিত আলোচনা করে নিচে দেওয়া হল যা তোমাদের পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য কিছু করবে। তাই আজকের আমাদের এই আর্টিকেলটি অনুশীলন কর এবং অনুসরণ করো।

৯ম-১০ম শ্রেণি বাংলা সাহিত্য পল্লিসাহিত্য সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

{getToc} $title={Table of Contents} $count={Boolean}

পল্লিসাহিত্য সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

পল্লিসাহিত্য সৃজনশীল প্রশ্ন ১

বাংলা বিষয়ের কালকা জন্মে তার চোরের মুখে বাংলার রূপকথার গৌরবময় ইতিহাস জানতে পেরে মাহমুদ পুলকিত হয়। রূপকথার গল্প শোনার তীব্র আকাঙ্ক্ষা জন্মে তার ভেতর। দাদির কাছে গিয়ে আবদার করে রূপকথার গল্প শোনার। বিষ্ণু দাদি হিন্দি সিরিয়াল দেখায় মগ্ন। দাদি বলে যেগুলো কি আর। এখন মনে আছে? তার চেয়ে হিন্দি সিরিয়াল দেখ। এগুলোতে দাদি হিন্দি সিরিয়াল দেখায় মাহমুদের মন খুব খারাপ হয়।

ক. ‘মৈমনসিংহ গীতিকা’ কে সংগ্রহ করেন?

খ. “নচেৎ এ সকল কেবলি ভুয়া, কেবলি ফক্কিকার।” বলতে লেখক কী বুঝিয়েছেন?

গ. উদ্দীপকের মাহমুদের মনোভাবে ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধের কোন দিকের প্রতিফলন ঘটেছে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ.উদ্দীপকের দাদির মতো রূপকথার গল্পগুলোর প্রতি আমাদের অনাগ্রহই পল্লিসাহিত্য হারিয়ে যাওয়ার জন্য দায়ী।”- ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধের আলোকে মন্তব্যটির যথার্থতা মূল্যায়ন কর।

পল্লিসাহিত্য সৃজনশীল ১নং প্রশ্নের উত্তর

(ক) মৈমনসিংহ গীতিকা সংগ্রহ করেন ড. দীনেশচন্দ্র সেন।

(খ) পল্লিসাহিত্যের প্রতি যত্নশীল না হওয়ার কুফল সম্পর্কে বলতে গিয়ে লেখক এ কথা বলেছেন।

পল্লিসাহিত্য আমাদের দেশের ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। একসময় এ দেশের পল্লিসাহিত্য যথেন্ট সমৃদ্ধ ছিল। বর্তমানে মানুষের রুচির পরিবর্তনে এগুলো লুপ্ত হতে চলেছে। ফলে পল্লিসাহিত্যের উপাদানগুলো এখন ধ্বংসের মুখে। অথচ অতীতে সর্বস্তরের মানুষ এই পল্লিসাহিত্য সম্পর্কে জানত এবং চর্চা করত। আর এখন সেগুলো অনাদৃত হয়ে পড়ে আছে। যদি চর্চার অভাবে এগুলো এভাবেই পড়ে থাকে তাহলে ভবিষ্যতে এগুলোর আর কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। তাই পল্লিজননীর সন্তানদের উচিত এগুলোর প্রতি গুরুত্ব দেওয়া, চর্চা করা। তা না হলে অবহেলা ও অনাদরে একসময় এগুলো বিলীন হয়ে যাবে। এই বিষয়টি বোঝাতেই প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি করা হয়েছে।

সারকথা: (পল্লিসাহিত্যের যত্ন না নিলে সেগুলো একসময় কালের গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তখন আর এগুলোর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না।)

(গ) উদ্দীপকের মাহমুদের মনোভাবে ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধে বর্ণিত পল্লিসাহিত্যের প্রতি প্রাণের টান ও মানবিক আবেদনের দিকটির প্রতিফলন ঘটেছে।

বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ পল্লিজননীর বুকের কোণে লুকিয়ে রয়েছে। পল্লিসাহিত্যের এই সম্পদ বাঙালির প্রাণের সঙ্গে মিশে আছে। পল্লির প্রাচীন সম্পদের মধ্যে অন্যতম একটি হলো রূপকথা।

‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধে লেখক পল্লিসাহিত্যের অনুষঙ্গগুলোকে অমূল্য সম্পদ বলে উল্লেখ করেছেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ছড়া, উপকথা, রূপকথা, পল্লিগান ইত্যাদি। এই বিষয়গুলো পল্লির সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনার কথা প্রকাশ করে। গ্রামবাংলার মানুষের ধ্যানধারণা, ভাব, কল্পনা ও অনুভূতির সঙ্গে লোকসাহিত্যের বিভিন্ন অনুষঙ্গ জড়িয়ে রয়েছে। 

উদ্দীপকের মাহমুদের মধ্যে ‘পল্লিসাহিত্য’ রচনার লেখকের এই চেতনারই প্রতিফলন ঘটেছে। সে ক্লাস শিক্ষকের মুখে বাংলার রূপকথার গৌরবময় ইতিহাস জানতে পেরে পুলকিত হয়। দাদির কাছে এসব শুনতে চায়। এভাবে উদ্দীপকের মাহমুদের মাঝে ‘পল্লিসাহিত্য’ রচনার পল্লিসাহিত্যের প্রতি ভালোবাসার দিকটি ফুটে উঠেছে।

সারকথা:(‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধে ছড়া, উপকথা, রূপকথা, পল্লিগান প্রভৃতিকে পল্লিসাহিত্যের অমূল্য সম্পদ বলা হয়েছে। উদ্দীপকের মাহমুদের মাঝেও অনুরূপ চেতনা প্রকাশ পেয়েছে।)

(ঘ) “উদ্দীপকের দাদির মতো রূপকথার গল্পগুলোর প্রতি আমাদের অনাগ্রহই পল্লিসাহিত্য হারিয়ে যাওয়ার জন্য দায়ী।” মন্তব্যটি যথার্থ। পল্লিসাহিত্য আমাদের অমূল্য সম্পদ। বাঙালির এই প্রাণের সম্পদ আজ অবহেলা-অনাদরে হারিয়ে যেতে বসেছে। এর গুরুত্ব অনুধাবন করে এগুলোর সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণে সবাইকে তৎপর হতে হবে।

উদ্দীপকে দাদির মনোভাবে পল্লিসাহিত্যের প্রতি অবহেলা প্রকাশ পেয়েছে। তার নাতি মাহমুদ রূপকথা শুনতে চাইলে তিনি মনে না থাকার অজুহাতে এড়িয়ে যান এবং হিন্দি সিরিয়াল দেখার পরামর্শ দেন। এই দিকটি ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধেও আলোচনা করা হয়েছে। এখানে লেখক পল্লিসাহিত্য হারিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের উদাসীনতা ও অনাদরকে দায়ী করেছেন। উদ্দীপকের দাদির কর্মকান্ডে তা লক্ষ করা যায়।

‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধে লেখক পল্লিসাহিত্য হারিয়ে যাওয়ার কারণগুলো তুলে ধরেছেন। তাঁর মতে পল্লিসাহিত্যের কিছু অংশ এখনও আছে। সময়ের ও রুচির পরিবর্তনে সেটুকুও অনাদৃত হয়ে ধ্বংসের পথে এসে দাঁড়িয়েছে। উদ্দীপকের দাদির কর্মকান্ডে এই দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে। তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

সারকথা: ( উদ্দীপকের দাদি পল্লিসাহিত্যের প্রতি অবহেলা প্রদর্শন করেছেন। ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধে লেখক এটিকেই পল্লিসাহিত্য হারিয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে তুলে ধরেছেন।)

Read more: বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে mcq প্রশ্ন জেনে নিন [PDF]

নবম শ্রেণির বাংলা সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

পল্লিসাহিত্য সৃজনশীল প্রশ্ন ২

ড. রশিদ হাতুন জাহাজলীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক। তিনি নাট্যরূপ দেয়ার জন্য বিভিন্ন লোককবির পাদ গাব ও কাহিনি সংগ্রস্থ করার চেষ্টা করেন। একবার তিনি মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার দুইজন লোককবির লোকগাথা সংগ্রহ করেন। পরে তিনি এই শাখাগুলোর নাট্যরূপ দিয়ে তাঁর বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের দ্বারা অভিনয় করান। পরে রেকর্ডিং করে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়ার। উদ্যোগ নিলেন।

ক. ভুয়োদর্শন’ অর্থ কী?

খ. ‘পল্লিসাহিত্যে হিন্দু-মুসলমান সকল সন্তানেরই সমান অধিকার’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

গ. উদ্দীপকের অধ্যাপক সাহেবের কাজের মধ্যে ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধের প্রতিফলিত দিকটি ব্যাখ্যা কর।

ঘ. অধ্যাপক ড. রশিদ হারুন-এর পদক্ষেপ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর চাওয়াকেই তুলে ধরেছে।”- বক্তব্যটি ‘পল্লিসাহিত্য

পল্লিসাহিত্য সৃজনশীল ২নং প্রশ্নের উত্তর

(ক) ‘ভুয়োদর্শন’ মানে অনেক দেখা ও শোনার মাধ্যমে অর্জিত অভিজ্ঞতা।

(খ) প্রখোস্ত বাক্যের মাধ্যমে লেখক পল্লিসাহিত্যের অসাম্প্রদায়িক এবং সর্বজনীন আবেদনের দিকটি তুলে ধরেছেন।

‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধে লেখক বলেছেন রূপকথা, পল্লিগাথা, পল্লিগান, ছড়া প্রভৃতি দেশের আলো-বাতাসের মতো সবারই সাধারণ সম্পত্তি। তাতে হিন্দু-মুসলমান কোনো ভেদ নেই। মায়ের দুষে যেমন সন্তানমাত্রই অধিকার থাকে, সেরূপ পল্লিসাহিত্যে পল্লিজননীর হিন্দু-মুসলমান সব সন্তানেরই সমান অধিকার।

সারকথা: ( আলোচ্য ব্যাকোর মাধ্যমে প্রাবন্ধিক পল্লিসাহিত্যের সর্বজনীন দিকটি তুলে ধরেছেন।)

(গ) উদ্দীপকের অধ্যাপক সাহেবের কাজের মধ্যে ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধের লোকগাথা ও উপকথার দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে।

পল্লিসাহিত্যের মধ্যে উপকথা, রূপকথা বা পল্লিগাথা অন্যতম সম্পদ। এসব অমূল্য সম্পদের সঙ্গে শহরে সাহিত্যের কোনো তুলনা হয় না। উপকথা, রূপকথা বা পল্লিগাথা পঞ্জির প্রাচীন সম্পদ।

উদ্দীপকের অধ্যাপক ড. রশিদ হারুন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের একজন অধ্যাপক। তিনি মানিকগঞ্জে থেকে দুজন কবির লোকগাথা সংগ্রহ করেন। এছাড়াও বিভিন্ন লোককবির পালাগান ও কাহিনি সংগ্রহ করেন। তিনি ওই গাথাগুলোর নাট্যরূপ দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের দ্বারা অভিনয় করান এবং সেগুলো রেকর্ডিং করিয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেন। ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধেও বিভিন্ন উপকথার কথা বলা হয়েছে, যা আমাদের লোকগাথার অন্তর্ভুক্ত। পল্লিসাহিত্যের এই উপকথা বা রূপকথাগুলি অমূল্য রত্নবিশেষ। 

এছাড়াও রয়েছে ঠাকুরমার ঝুলি, ঠাকুরদার থলে, মৈমনসিংহ গীতিকা ইত্যাদি। এক অফুরন্ত ভাণ্ডার পল্লির ঘাটে-মাঠে ছড়ানো আছে। তাই বলা যায় যে, উদ্দীপকের অধ্যাপক সাহেবের কাজের মধ্যে আলোচ্য প্রবন্ধের লোকগাথা ও উপকথার বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে।।

সারকথা: (উদ্দীপকের অধ্যাপক ড. রশিদ হারুন বিভিন্ন লোককবির পালাগান ও কাহিনি সংগ্রহ করেন। ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধেও পল্লিসাহিত্যের বিভিন্ন উপকরণের কথা বলা হয়েছে। এগুলোই উদ্দীপকে প্রতিফলিত হয়েছে।)

(ঘ) “অধ্যাপক ড. রশিদ হারুন-এর পদক্ষেপ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর চাওয়াকেই তুলে ধরেছে।”- মন্তব্যটি যথার্থ।

পল্লিসাহিত্য বাংলা সাহিত্যের প্রাণস্বরূপ। নানা কারণে পল্লিসাহিত্য আজ বিলুপ্তির পথে। আমাদের উন্নত সমাজভাবনা ও সাহিত্যের ব্যাপকতার জন্য পল্লিসাহিত্য একান্ত জরুরি।

উদ্দীপকের ড. রশিদ হারুন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক। তিনি নাট্যরূপ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন লোককবির পালাগান ও কাহিনি সংগ্রহ করার চেষ্টা করেন। পরে তিনি এগুলোর নাট্যরূপ দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের দ্বারা অভিনয় করান। ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধেও লেখক বলেছেন, বিভিন্ন রূপকথা, পরিগাথা, ছড়া প্রভৃতি দেশের আলো-বাতাসের মতো সবার সাধারণ সম্পত্তি। এজন্য সবারই উচিত এগুলো সংরক্ষণ করা। এগুলো সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণের জন্য তিনি সবাইকে সচেতন করতে চেয়েছন। এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রয়োজন অনুভব করেছেন।

উদ্দীপকের অধ্যাপক ড. রশিদ হারুন লোকগাথা, কাহিনি, পালাগান সংগ্রহ করে সেগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছেন। নাট্যরূপ দিয়ে সেগুলোকে সময়োপযোগী করেছেন। আলোচ্য প্রবন্ধেও লেখক বাংলার লোকসংস্কৃতি সংরক্ষণ ও প্রসারের জন্য পল্লিসাহিত্যের বিচিত্র সম্পদ আহরণের কথা বলেছেন। এসব বিচারে বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

সারকথা: (উদ্দীপকের অধ্যাপক ড. রশিদ হারুন লোকসাহিত্যের বিভিন্ন উপাদান সংগহ করে আলোচ্য প্রবন্দেও প্রাবন্ধিক একই প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। সুতরাং বলা যায়, মন্তব্যটি যথার্থ। সেগুলো বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করেছেন।)

নবম-দশম শ্রেণির বাংলা সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

পল্লিসাহিত্য সৃজনশীল প্রশ্ন ৩

অর্ণব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি হয়ে বিজয় একাত্তর’ হলে থাকে। অর্ণব দেখতে পেল মোবাইল ফোনে সহপাঠীরা প্রতি এই অনাগ্রহ দেখে অর্ণব মোখতে পেল মোবাইল ফোনে সহপাঠীরা পাগলা কানাই-এর গান শোনে। অর্ণবের উদ্যোগের ফলেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধীরে ধীরে লোকসংস্কৃতির প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পায়।

ক. প্রবাদ বাক্য কী?

খ. ছড়া সাহিত্যকে সরস প্রাণের জীবন্ত উৎস বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকের অর্ণবের সহপাঠীরা যে সাহিত্যের অনুরাগী তা ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধের আলোকে ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “উদ্দীপকের অর্ণবের উদ্যোগই ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধের লেখকের প্রত্যাশা।”- বিশ্লেষণ কর

পল্লিসাহিত্য সৃজনশীল ৩নং প্রশ্নের উত্তর

(ক) প্রবাদ বাক্য হলো দীর্ঘদিন ধরে লোকমুখে প্রচলিত বিশ্বাসযোগ্য কথা বা জনশ্রুতি।

(খ) মানুষের প্রাণের সরল প্রকাশের কারণে ছড়া সাহিত্যকে সরস প্রাণের জীবন্ত উৎস বলা হয়েছে। “

পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধে লেখক পল্লিসাহিত্যের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছেন। সেগুলোর মধ্যে ছড়া অন্যতম একটি। একসময় খেলার ছলে আনন্দে শিশুরা বিভিন্ন ছড়া কাটত, মায়েরা ছড়া কেটে সুরে সুরে সন্তানদের ঘুম পাড়াত। মানুষ তখন এগুলো সহজ-সরল মনে রচনা করত বলে তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো ছিল মানুষের সহজ প্রাণের বহিঃপ্রকাশ। এই কারণে লেখক ছড়া সাহিত্যকে সরস প্রাণের জীবন্ত উৎস বলেছেন।

সারকথা: (ছড়া সাহিত্যের গুরুত্বের দিক বিবেচনা করে হড়া সাহিত্যকে সরস প্রাণের জীবন্ত উৎস বলা হয়।)

(গ) উদ্দীপকের অর্ণবের সহপাঠীরা যে সাহিত্যের অনুরাগী তা ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধে আলোচিত শহুরে সাহিত্যের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

পল্লিসাহিত্য এ দেশের ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। একসময় এ দেশের পল্লিসাহিত্য যথেস্ট সমৃদ্ধ ছিল। বর্তমানে শহুরে সাহিত্যের প্রভাবে তা নষ্ট হয়ে ধ্বংসের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে।

উদ্দীপকের অর্ণবের সহপাঠীরা যা পছন্দ করে তা হলো হিন্দি, রক ও ব্যান্ডের গান। তাদের শোনা এ গানগুলো নাগরিক সাহিত্য বা শহুরে সাহিত্যের অংশ। ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধে লেখক এগুলোকে শহরে সাহিত্য বা শহুরে গান বলেছেন। লেখকের মতে যে সাহিত্যে বাবু-বিবির কথা, রাজ-রাজড়ার কথা, বিজলি বাতির কথা রয়েছে তা নাগরিক বা শহরে সাহিত্য। তাতে সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখের কথা থাকে না। আলোচ্য উদ্দীপকের অর্ণবের সহপাঠীরা মোবাইল ফোনে যে গান শোনে বা যে সাহিত্যের অনুরাগী সেখানেও সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখের কথা নেই। কারণ তা শহরে সাহিত্য বা শহুরে গান।

সারকথা: (উদ্দীপকের অর্ণবের সহপাঠীরা শহরে বাস করে। তারা মোবাইল ফোনে বিভিন্ন ধরনের গান শোনে। তারা যেস ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধে লেখক তাকে শহুরে সাহিত্য বলা হয়েতোর সাহিত্যের অনুরাগী)

(ঘ) ‘উদ্দীপকের অর্ণবের উদ্যোগই ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধের লেখকের প্রত্যাশা।”- মন্তব্যটি যথার্থ।

পল্লিসাহিত্য বাঙালির প্রাণের সঙ্গে মিশে আছে। পল্লির বুকজুড়ে ছড়িয়ে থাকা পল্লিসাহিত্য মানুষের জীবনের কথা বলে। তাই এগুলো সংরক্ষণ করা একান্ত জরুরি।

উদ্দীপকের অর্ণব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। লোকসংগীতের প্রতি তার যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে। তবে অর্ণবের সহপাঠীরা শহূরে সাহিত্যের প্রতি আসক্ত। তারা পল্লিগান বা লোকসংগীত পছন্দ করে না। অর্ণব লোকসংগীতের প্রতি সহপাঠীদের এই অনাগ্রহ দেখে মোবাইলে আব্বাস উদ্দিন, লালন শাহ্, হাসন রাজা, পাগলা কানাই প্রমুখের গান শোনে। তার বাজানো গান শুনে তার সহপাঠীরা ধীরে ধীরে লোকসংস্কৃতির প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে। ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধে লেখক বাংলার পল্লিসাহিত্যের বিভিন্ন সম্পদ নিয়ে আলোচনা করেছেন। পল্লিসাহিত্য সম্পর্কে তাঁর অভিমত হলো এগুলো আমাদের অমূল্য সম্পদ, এগুলো সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে হবে। পল্লিসাহিত্যের প্রসারের জন্য আরও বেশি যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মত দিয়েছেন।

‘পল্লিসাহিত্য’ লেখক প্রাবন্ধিক পল্লিসাহিত্যগুলো বাঁচিয়ে রাখার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। উদ্দীপকের অর্ণবের কর্মকান্ড লেখকের সেই প্রত্যাশাই পূরণ করে। তাই বলা যায় যে, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

সারকথা: (উদ্দীপকের অর্ণব লোকগান বাঁচানোর জন্য যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তা ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্দের লেখকের পল্লিসাহিত্য সংরক্ষণের প্রত্যাশাকেই পূরণ করে।)

Read more: অধ্যবসায় রচনা

এসএসসি ২০২৪ বাংলা প্রথম পত্র : নমুনা সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

পল্লিসাহিত্য সৃজনশীল প্রশ্ন ৪

ষাটোর্ধ্ব শমসের গাজি বাড়ি ফেরার পথে দেখেন দুজন যুবক মোবাইল ফোনে মরমি শিল্পী আব্দুল আলীমের গাওয়া ‘পরের জায়গা পরের জামি, ঘর বানাইয়া আমি রই’ গানটি মনোযোগ দিয়ে শুনছে। তিনি তাদের কাছে গিয়ে বললেন, ‘এখনকার ছেলেরা রো শোনে না, অথচ তোমরা…। সমাসের গাজির কথা শুনে যুবকরা বলে ওঠে, ‘এ গানগুলোই তো বাঙালি সংস্কৃতির প্রাণ। এগুলোকে কীভাবে ভুলি?’ যুবকদের কথা মধুর মতো লাগে তাঁর কানে।

ক. মনসুর বয়াতি কে?

খ. ‘নচেৎ এ সকল কেবলি ভুয়া, কেবলি ফরিকার’- লেখক একথা কেন বলেছেন?

গ. উদ্দীপকের যুবকদের মাঝে ‘পল্লিসাহিত্য’ রচনার যে দিকটি ফুটে উঠেছে তা ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপকের শমসের গাজি কি ‘পল্লিসাহিত্য’ রচনার লেখকের চেতনার ধারক? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।

পল্লিসাহিত্য সৃজনশীল ৪নং প্রশ্নের উত্তর

(ক) মনসুর বয়াতি ছিলেন ‘দেওয়ানা মদিনা’ লোকগাথার প্রখ্যাত কবি।

(খ) পল্লিসাহিত্যের প্রতি যত্নশীল না হওয়ার কুফল সম্পর্কে বলতে গিয়ে লেখক এ কথা বলেছেন।

পল্লিসাহিত্য আমাদের দেশের ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। এক সময় এ দেশের পল্লিসাহিত্য যথেষ্ট সমৃদ্ধ ছিল। বর্তমানে মানুষের বুচির পরিবর্তনে এগুলো লুপ্ত হতে চলেছে। ফলে পল্লিসাহিত্যের উপাদানগুলো এখন ধ্বংসের মুখে। অথচ অতীতে সর্বস্তরের মানুষ এই পল্লিসাহিত্য সম্পর্কে জানত এবং চর্চা করত। আর এখন সেগুলো অনাদৃত হয়ে পড়ে আছে। যদি চর্চার অভাবে এগুলো এভাবেই পড়ে থাকে তাহলে ভবিষ্যতে এগুলোর আর কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। তাই পল্লিজননীর সন্তানদের উচিত এগুলোর প্রতি গুরুত্ব দেওয়া, চর্চা করা। তা না হলে অবহেলা ও অনাদরে এক সময় এগুলো বিলীন হয়ে যাবে। এই বিষয়টি বোঝাতেই প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি করা হয়েছে।।

সারকথা: ( পল্লিসাহিত্যের যত্ন না নিলে সেগুলো এক সময় বিলীন হয়ে যাবে। তখন তার এগুলোর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না।)

(গ) উদ্দীপকের যুবকদের মাঝে ‘পল্লিসাহিত্য’ রচনার পল্লিগানকে অমূল্যসম্পদ বিবেচনা করার দিকটি ফুটে উঠেছে। বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ পল্লিজননীর বুকের কোণে লুকিয়ে রয়েছে। পল্লিসাহিতোর এই সম্পদ বাঙালির প্রাণের সঙ্গে মিশে আছে। পল্লির প্রাচীন সম্পদের মধ্যে অন্যতম একটি হলো পল্লিগান।

‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধে লেখক পল্লিগানগুলোকে পল্লিসাহিত্যের অমূল্য সম্পদ বলে উল্লেখ করেছেন। এগানগুলোর মধ্যে রয়েছে জারি, সারি, ভাটিয়ালি, মারফতি, ভাওয়াইয়া ইত্যাদি। এই গানগুলো পল্লির সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনার কথা প্রকাশ করে। গ্রামবাংলার মানুষের ধ্যান-ধারণা, ভাব, কল্পনা ও অনুভূতির সঙ্গে এই গানগুলো জড়িয়ে রয়েছে। উদ্দীপকের যুবকদের মধ্যে ‘পল্লিসাহিত্য’ রচনার লেখকের এই চেতনারই প্রতিফলন ঘটেছে। তারা মনে করে আব্দুল আলীমের গাওয়া এই গানটি বাঙালি সংস্কৃতির প্রাণ, অমূল্য সম্পদ। এভাবে উদ্দীপকের যুবকদের মাঝে ‘পল্লিসাহিত্য’ রচনার পল্লিগানকে অমূল্য সম্পদ বিবেচনা করার দিকটি ফুটে উঠেছে।

সারকথা: (‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধে বলা হয়েছে জারি, সারি, ভাটিয়ালি, মারফতি গানগুলো পল্লিসাহিত্যের অমূল্য সম্পদ। উদ্দীপকের যুবকদের মাঝেও অনুরূপ চেতনা প্রকাশ পেয়েছে।)

(ঘ) হ্যাঁ, উদ্দীপকের শমসের গাজি ‘পল্লিসাহিত্য’ রচনার লেখকের চেতনার ধারক।

পল্লিসাহিত্য বাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে আছে। বাঙালির এই প্রাণের সম্পদ আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। পল্লিসাহিত্যের গুরুত্ব অনুধাবন করে এগুলো সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণে সবাইকে তৎপর হতে হবে।

‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধে পল্লিসাহিত্যের কয়েকটি বিশেষ দিক তুলে ধরা হয়েছে। এ প্রবন্ধে লেখক পল্লিসাহিত্যের বিভিন্ন উপাদানের কথা বলতে গিয়ে পল্লিসাহিত্যের গুরুত্ব বর্ণনা করেছেন। তিনি পল্লিসাহিত্য সংরক্ষণ ও প্রসারের জন্য পল্লিসাহিত্যের বিচিত্র সম্পদ আহরণের কথা বলেছেন। কারণ তিনি মনে করেন এগুলো আমাদের অমূল্য সম্পদ। উদ্দীপকের শমসের গাজি পল্লিগীতি সম্পর্কে যুবকদের মতামত শুনে খুব খুশি হন। যুবকদের কথা তাঁর কানে মধুর মতো লাগে। কারণ তিনিও পল্লিসাহিত্যের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারেন। তাই যুব সমাজের মধ্যে এখানে ছড়িয়ে যাচ্ছে এবং তারা এগুলো পছন্দ করছে দেখে তার ভালো লাগে।।

“পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধের লেখক পল্লিসাহিত্যের বিভিন্ন উপাদান সম্পর্কে আলোচনা করেছেন তা আমাদের মধ্যেও ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন। সেই চেতনা যুব সমাজের মধ্যে বিদ্যমান দেখে উদ্দীপকের শমসের গাজির ভালো লেগেছে। তাই বলা যায় যে, উদ্দীপকের শমসের গাজি ‘পল্লিসাহিত্য’ রচনার লেখকের চেতনার ধারক।

সারকথা: (পল্লিসাহিত্য পল্লির প্রাণ, এদেশের ঐতিহ্য। এই সাহিত্যের সংগ্রহ, সংরক্ষক এবং চর্চার মাধ্যমে বিস্তার ঘটানো একান্ত জরুরি। এই দিকটি উদ্দীপ ও ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধে প্রকাশ পেয়েছে।)

উৎস পরিচিতি

১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে কিশোরগঞ্জ জেলার পূর্ব ময়মনসিংহ সম্মিলিত অধিবেশন ডাক্তার মোঃ শহিদুল্লাহ সভাপতিত্ব করেন তিনি সভাপতি হিসেবে অভিভাষণ দেন তারই লেখা এবং রূপ এই পল্লী সাহিত্য প্রবন্ধ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *