কৃষি ব্যাংকে লোন নেওয়ার নিয়ম ২০২৪

বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে ব্যাংকিং সেবা প্রধান কারী সকল ব্যাংক গুলোর মধ্যে কৃষি ব্যাংক অন্যতম। এই ব্যাংকে অনেক ধরনের লোনের সুবিধা থাকে। এই ব্যাংক মানুষের জীবনধারা পরিবর্তনের জন্য এবং উন্নতির লক্ষ্যে ১৮ মাস মেয়াদ লোন প্রদান করে থাকে। আজকে আমরা আমাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানবো কৃষি ব্যাংকে লোন নেওয়ার সকল কিছু তথ্য।

কৃষি ব্যাংকে লোন নেওয়ার নিয়ম ২০২৪

{getToc} $title={Table of Contents} $count={Boolean}

কৃষি ব্যাংক মূলত লোন প্রদান করে মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নত করার জন্য। তাদের প্রধান উদ্দেশ্য গ্রামীন অর্থনীতি কে আরো শক্তিশালী করে তোলা। চলুন তাহলে এবার আমরা জেনে নিই কৃষি ব্যাংকে লোন নেওয়ার নিয়ম। কৃষি ব্যাংকের লোন নিতে কি কি কাগজ পত্র লাগে সেগুলো সম্পর্কে।

কৃষি ব্যাংকের লোন নেওয়ার নিয়ম

কৃষি ব্যাংক থেকে আপনাকে লোন নিতে হলে প্রথমে গুগলে গিয়ে গুগলের প্লে স্টোর থেকে BKB-janala মোবাইল অ্যাপটি ডাউনলোড করে অ্যাপসের মাধ্যমে সকল তথ্য সিলেক্ট করে আপনি আপনার লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আর যদি ওই উপায়টা আপনার কাছে কঠিন মনে হয় তাহলে আপনার নিকট বর্তী যে কোনো কৃষি ব্যাংকে গিয়ে সরাসরি ব্যাংক লোনের জন্য আবেদন করতে পারেন। 

Also Read : ইসলামী ব্যাংক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৩

ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কৃষকদের সকল অবস্থা বিবেচনা করে কৃষি ব্যাংকের বিভিন্ন খাতে লোন দিয়ে থাকে। বাংলাদেশে কৃষকদের জীবনযাত্রা মানে উন্নত করতেই বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুমোদিত এই কৃষি ব্যাংক যা বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক নামে খ্যাতি পেয়েছে।

কৃষি ব্যাংক লোন পদ্ধতি

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে দেশের ব্যাংক গুলোর অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বিশেষ করে কৃষক দের উন্নয়নের জন্য কৃষি ব্যাংকের ভূমিকা অপরিসীম। আমরা অন্যান্য ব্যাংকের কথা শুনলে কৃষক দের কথা আমাদের মাথায় তেমন আসে না। 

কিন্তু যখন আমরা শুনি কৃষি ব্যাংক তখনই আমাদের মাথায় কৃষকদের কথা চলে আসে তাদের সুবিধা ও অসুবিধা সকল কিছু নিয়ে আমাদের মাথায় অনেক প্রশ্ন চলে আসে। 

Also Read : গরুর খামার করতে ব্যাংক লোন কিভাবে নিবেন (২০২৪)

তাই বর্তমানে সরকার বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে প্রায় ৫০টি জেলায় এই কৃষি ব্যাংক চালু করেছেন। তাই এখন কৃষকরা অনেক উপায় এই কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে থাকেন। তবে কৃষক দের এই কথা অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে যে এই লোন তাদেরকে ১৮ মাসের ভিতর পরিশোধ করতে হবে। 

এছাড়াও এই ব্যাংক কৃষক দের কে আরো সুবিধা প্রদান করার জন্য তাদের জীবন যাত্রা আরও সহজ করার জন্য পাঁচ বছর একটি লোন প্রদান করে থাকে।

কৃষি ব্যাংকের লোন App

BKB-Janala বাংলাদেশের কৃষি ব্যাংকের একটি লোন অ্যাপস। এই অ্যাপসের মাধ্যমে আপনি ঘরে বসেই আপনার কৃষি লোনের জন্য আবেদন করতে পারেন। এই অ্যাপসের মাধ্যমে আপনাকে বলে দিবে আপনি কোন লোনটি কি ভাবে নিবেন। এই অ্যাপসের মাধ্যমে কৃষক রা জানতে পারবে কৃষি ব্যাংকের যাবতীয় সকল তথ্য। 

এই অ্যাপটি আপনারা সরাসরি গুগল প্লে স্টোর থেকে ফ্রিতেই ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। অথবা উপরে উল্লেখিত অ্যাপে ক্লিক করে কৃষি ব্যাংকের অফিসিয়াল application টি ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।

কৃষি ব্যাংকের লোনের ইন্টারেস্ট রেট কত?

কৃষি ব্যাংক তাদের লোন কৃত অর্থের ইন্টারেস্ট রেট হলো ৮%। অন্যান্য ব্যাংকের মতো বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের লোন ইন্টারেস্ট ছিল ৯%। কিন্তু পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংক কৃষকদের সুবিধার জন্য সেটি নামিয়ে ৮% করে দেয়। 

Also Read : অগ্রণী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার নিয়ম

কারণ এতে করে কৃষকরা তাদের লোন সুবিধা এবং লোন কৃত অর্থ পরিশোধ করতে কোন প্রকার অসুবিধায় পড়বে না। আপনি যদি কোন ব্যাংক থেকে লোন নিতে ইন্টারেস্ট হন তাহলে আগে সেই ব্যাংকের লোন ইন্টারেস্ট রেট সম্পর্কে আপনার জেনে নেওয়া উচিত।

কৃষি ব্যাংকের সকল সুযোগ সুবিধা

অন্যান্য ব্যাংক থেকে কৃষি ব্যাংকে সব থেকে বেশি সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে। এবং এই সকল সুযোগ-সুবিধা কৃষকরা খুব সহজে উপভোগ করে নিতে পারবেন। কৃষি ব্যাংক এবং দরিদ্র কৃষক দের জন্য স্বল্প সুদে অনেক বড় বড় লোন প্রদান করে থাকে। 

এর পাশাপাশি তারা অনেক ধরনের সুযোগ-সুবিধাও দিয়ে থাকে যা কৃষকরা উপভোগ করতে পারবে। চলুন তাহলে এবার জেনে নেওয়া যাক কৃষি ব্যাংকের সেই সকল সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে।

কৃষি ব্যাংকের সকল সুযোগ সুবিধা হল :

  • ডিপিএস সেবা।
  • আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয় করবার জন্য লোন।
  • কৃষি ব্যাংক থেকে শস্য লোন নেওয়ার জন্য সুবিধা।
  • বিভিন্ন খাতে কৃষকদের জন্য স্বল্প সুদে লোন সুযোগ।
  • মাছ চাষের জন্য লোন নেওয়ার সুযোগ।
  • কৃষি ব্যাংক থেকে প্রাণী সম্পদ খাতে লোন।

এই সকল লোনের সুযোগ সুবিধা গুলো ব্যাংকে থেকে নিতে পারবেন যা গরিব দরিদ্র কৃষকদের জন্য এক বিরাট সুযোগ।

কৃষি ব্যাংক থেকে লোন কিভাবে নেওয়া যায়

আপনি যদি কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নিতে চান। তাহলে আপনার নিকটবর্তী কৃষি ব্যাংক শাখায় যোগাযোগ করে আবেদন ফরম নিতে পারেন। এবং আবেদন ফরমে প্রয়োজনীয় শর্তাবলী অনুসারে আপনি কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারেন। এছাড়াও উপরে আলোচিত অ্যাপের মাধ্যমে আবেদন করে লোন নিতে পারেন। 

Also Read : পাসপোর্ট করার নিয়ম

এবং ওই অ্যাপের মাধ্যমে লোন সম্পর্কিত বিস্তারিত সকল তথ্য পেয়ে যাবেন। কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নিতে হলে আপনাকে প্রথমে একটি ব্যাংক একাউন্ট খুলতে হবে। 

পরবর্তীতে আপনি কৃষি ব্যাংক থেকে আপনার যোগ্যতা অনুযায়ী এবং ওই উল্লেখিত সকল শর্ত অনুযায়ী আপনি লোন পাবেন। চলুন তাহলে এবার বিস্তারিত সেই সকল সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক যেগুলো আপনি কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নিতে কাজে লাগবে।

কৃষি ব্যাংক থেকে কি কি খাতে লোন দেওয়া হয়

বর্তমানে বাংলাদেশের কৃষকরা পাঁচটি সহজ খাতে সহজ নিয়মে ঋণ নিতে পারবে। যার জন্য খুবই সহজ শর্ত প্রদান করে থাকে ব্যাংক। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক ওই পাঁচটি কি কি।

  • শস্য ঋণ
  • মৎস্য ঋণ
  • লাইভ স্টক ঋণ
  • কৃষি ও সেচ যন্ত্রপাতি দিন
  • মুজিব বর্ষ ক্রেডিট ঋণ

বর্তমানে এই কৃষি ব্যাংক আরো কি কি ঋণ প্রদান করে থাকে সেই সম্পর্কে জানতে কৃষি ব্যাংকের অফিসিয়াল অ্যাপস এ ভিজিট করে আপনারা সেই সম্পর্কিত সকল তথ্য জেনে নিতে পারেন।

কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার জন্য যে যে ডকুমেন্ট প্রয়োজন

অন্যান্য ব্যাংকের মত কৃষি ব্যাংকে লোনের জন্য আগে কিছু ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে। কেউ যদি কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নিতে চান তাহলে উল্লেখিত ডকুমেন্ট ছাড়া কৃষি ব্যাংক আপনাকে কোন ভাবেই লোন প্রদান করবে না। 

তাই নিচে আমরা কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার জন্য যে যে ডকুমেন্ট গুলো প্রয়োজন এসে ডকুমেন্টন গুলোর নাম উল্লেখ করে দেওয়া হল।

  • কৃষি ব্যাংকে একটি অ্যাকাউন্ট করে নিতে হবে।
  • কৃষি কার্ড প্রয়োজন হবে।
  • আবেদনকারী জাতীয় পরিচয় পত্র লাগবে।
  • নাগরিক সনদপত্র লাগবে।
  • আবেদনকারী পাসপোর্ট সাইজের তিন কপি ছবি লাগবে।
  • যতটুকু জমি আছে তার দলিল লাগবে।
  • জমিদাতা ব্যক্তির দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে।
  • সরকারি নির্দেশিকা মোতাবেক ডিপি নোট স্ট্যাম্প লাগবে।
  • জমির খাজনার প্রমাণপত্র লাগবে।
  • আগের কোন ব্যাংক ডকুমেন্ট থাকলে সেটি লাগবে।

এবার আপনি যদি কৃষি লোন নিতে চান সকল ডকুমেন্ট নিয়ে ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করুন। এ সকল ডকুমেন্ট তাদের কাছে প্রদান করার পরে তারা আপনাকে কৃষি লোন প্রদান করবে। তবে হ্যাঁ এ লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের লোন ইন্টারেস্ট অবশ্যই জেনে নিবেন। 

যে কোনো ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার প্রথমে ব্যাংকের লোন ইন্টারেস্ট সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত। যদি আর অন্যান্য কোন ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয় তাহলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনাকে সেই সম্পর্কে জানিয়ে দিবে।

কৃষি ব্যাংক সিসি লোন

যদি আপনি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে এক কালীন দশ লক্ষ টাকার লোন নিতে চান। সে ক্ষেত্রে আপনাকে কৃষি ব্যাংকের নিকট ২৫ লক্ষ টাকার জমি দলিল জমা রাখতে হবে। সাধারণত যে কোন ব্যাংকে cc লোনের ক্ষেত্রে লোন গ্রহণ ব্যক্তি জমির দলিল, স্বর্ণ, জমা রাখে। 

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই সিসি লোনের মেয়াদ মাত্র এক বছর। তবে যদি আপনার এই সময় পরিবর্তনের প্রয়োজন হয় তাহলে সেটিও করে নিতে পারবেন। বাংলাদেশের এই কৃষি ব্যাংকের লোনের সুবিধা হল এই লোন এর অর্থ ব্যাংক একসাথে প্রদান করে থাকে। এই ব্যাংকের cc লোনে সুদের হার আবার ৯%।

কৃষি ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোনের সুবিধা

একজন কৃষক মনে করেন যে তিনি পার্সোনাল লোন নিবেন তাহলে তাদের জন্য এই ব্যাংক থেকে এই পার্সোনাল লোনের সুবিধা আছে। বাংলাদেশে অর্থনৈতিক উন্নয়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এবং বাংলাদেশে কৃষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে কৃষি পণ্য উৎপন্ন হয়। 

সেদিকে লক্ষ্য রেখে বাংলাদেশ ব্যাংক কৃষি ব্যাংকের আওতায় কৃষকদের জন্য পার্সোনাল লোনের সুবিধা প্রদান করেছেন। কৃষি ব্যাংকে এই পার্সোনাল লোনের সুদের হার ৮%।

কৃষি ব্যাংক কি সরকারি না বেসরকারি

যেহেতু কৃষি ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের আওতায় নির্মিত। তাই কৃষি ব্যাংক রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন একটি বিশেষায়িত ব্যাংক। কৃষি ব্যাংক ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। 

এই ব্যাংকের একমাত্র মুখ্য উদ্দেশ্য কৃষকদের উন্নতি সাধন করা। কৃষি ব্যাংকে বর্তমানে ১০৩৮ টি শাখা রয়েছে। বর্তমানে কৃষি ব্যাংকের সদর দপ্তর ৮৩- ৮৫ মতিঝিল অবস্থিত যেটি বাংলাদেশের ঢাকায় অবস্থিত।

আশা করি আজকে আমরা আমাদের পুরো আর্টিকেলে আপনাদের কৃষি ব্যাংক সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা প্রদান করতে পেরেছি। আপনাদের বুঝার সুবিধার্থে কৃষি ব্যাংকের সকল লোন সুদের হার সম্পর্কে আমরা আলোচনা করেছি। 

এরকম আরো অন্যান্য ব্যাংক এবং যাবতীয় তথ্য পাওয়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটে সকল ধরনের তথ্য দেওয়া আছে আপনারা চাইলে সেগুলো এক নজরে পড়ে নিতে পারেন।

Previous Post Next Post