নবম-দশম শ্রেণির জীববিজ্ঞান সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর – ১০ম অধ্যায় (সমন্বয়)

নবম-দশম শ্রেণির জীববিজ্ঞান সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর – ১০ম অধ্যায় (সমন্বয়)

আজকে আমরা বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থীদের জন্য এসএসসি জীববিজ্ঞান দশম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর সমন্বয় শেয়ার করতে চলেছি। এই পোস্টে তোমরা তোমাদের এ অধ্যায় সিলেবাস অনুযায়ী পরীক্ষায় কমন উপযোগী সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলো ও তার উত্তর সম্পর্কে জানতে পারবে।

নবম-দশম শ্রেণির জীববিজ্ঞান সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর – ১০ম অধ্যায় (সমন্বয়)

{getToc} $title={Table of Contents} $count={Boolean}

তোমরা আমাদের ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি প্রশ্ন ও উত্তর পেয়ে যাচ্ছ। এছাড়াও তোমাদের সুবিধার্থে আমরা ওয়েবসাইটে তোমাদের সকল সাবজেক্ট অনুযায়ী বিভিন্ন সিলেবাসের প্রশ্ন উল্লেখ করেছি।

জীববিজ্ঞান সৃজনশীল প্রশ্ন ১

নিকোটিন জাতীয় বস্তু সেবনে মানুষের স্নায়ুতন্ত্র বিশেষ করে মস্তিষ্ক সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্নায়ুকোষ তার কার্যকারিতা হারায়।

ক. ক্যালরি কী?

খ. উচ্চ রক্তচাপ কেন হয়?

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত অঙ্গের গঠন ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত কোষটি তার কার্যকারিতা হারালে কী ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হবে? বিশ্লেষণ কর। ৩

জীববিজ্ঞান সৃজনশীল প্রশ্ন ১ উত্তর

ক. পুষ্টি উপাদান থেকে নির্গত তাপশক্তির এককই হচ্ছে ক্যালরি।

খ. রক্ত চলাচলের সময় রক্তনালিগানে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি রক্তচাপ সৃষ্টি হলে তাকে উচ্চ রক্তচাপ বলে। বাবা বা মায়ের উচ্চ রক্তচাপ থাকলে তাদের সন্তানদের যারা স্নায়বিক চাপে বেশি ভোগেন, যাদের ধূমপানের অভ্যাস আছে, তাদের উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। এছাড়াও দেহের ওজন বেড়ে গেলে কিংবা লবণ এবং চর্বিযুক্ত খাদ্য বেশি খেলে এমন পরিবারের সদস্যদের ডায়াবেটিসের পূর্ব ইতিহাস থাকলে উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে।

গ. উদ্দীপকের উল্লেখিত অঙ্গটি হলো মস্তিষ্ক। নিচে মস্তিষ্কের গঠন ব্যাখ্যা করা হলো-

সুষুম্নাকান্ডের শীর্ষে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের যে স্ফীত অংশ করোটিকার মধ্যে অবস্থান করে তাই মস্তিষ্ক। মস্তিষ্ক তিনটি অংশে বিভক্ত, যথা- ১. অগ্রমস্তিষ্ক, ২. মধ্যমস্তিষ্ক, ৩. পশ্চাৎমস্তিষ্ক।

১. অগ্রমস্তিষ্ক : মস্তিষ্কের মধ্যে অগ্রমস্তিষ্ক বা সেরিব্রাম সবচেয়ে বড় অংশ। সেরিব্রামের ডান ও বাম অংশ দুটি অসম্পূর্ণভাবে বিভক্ত। দুটি অংশের মাঝখানে বিভেদক খাঁজ থাকায় এ বিভক্তি ঘটে। এদের সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার বলা হয়। বাম সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার দেহের ডান অংশ এবং ডান সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার দেহের বাম অংশকে নিয়ন্ত্রণ করে। মস্তিষ্কের এ অংশটির উপরিভাগ ঢেউ তোলা। মানুষের দেহের সেরিব্রামের বাম অংশ তুলনামূলকভাবে বেশি উন্নত। 

সেরিব্রামকে গুরুমস্তিষ্ক বলা হয়। এটি মেনিনজাইটিস নামক পর্দা দ্বারা আবৃত থাকে। এর বাইরের স্তরের নাম কর্টেক্স। কটেক্স আবার অসংখ্য নিউরন দ্বারা গঠিত। এর রং ধূসর। তাই কর্টেক্সের অপর নাম গ্রেম্যাটার, যা মেরুদণ্ডের ভিতর আন্তঃযোগাযোগ রক্ষা করে। আবার সেরিব্রামের ভিতরের স্তরে স্নায়ুতন্ত্র থাকে। স্নায়ুতন্ত্রের রং সাদা। এ স্তরের নাম শ্বেত পদার্থ। শ্বেত পদার্থ মেরুরজ্জের উপরে ও নিচে স্নায়ু তাড়না বহন করে।

২. মধ্য মস্তিষ্ক: পশ্চাৎ মস্তিষ্কের উপরের অংশ হলো মধ্যমস্তিষ্ক। এটি অগ্র ও পশ্চাৎ মস্তিষ্ককে সংযুক্ত করে। মধ্যমস্তিষ্কের পিছনে অবস্থিত নলাকৃতি বৃহৎ অংশের নাম পনস। এটি সেরিবেলামন্ডি মেডুলা অবলংগাটার মধ্যে সংযোগ

৩. পশ্চাৎ মস্তিষ্ক : এটি সেরিবেলাম, পনস ও মেডুলা অবলংগাটা ২ উ স্থাপন করে। নিয়ে গঠিত।

সারকথা : সুষুম্নাকান্ডের শীর্ষে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের যে স্ফীত অংশ করোটিকার মধ্যে অবস্থান করে তাই মস্তিষ্ক। মস্তিষ্ক তিনটি অংশে বিভক্ত,

যথা- ১. অগ্রমস্তিষ্ক, ২. মধ্যমস্তিষ্ক, ৩. পশ্চাৎমস্তিষ্ক।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত কোষটি হলো স্নায়ুকোষ বা নিউরন। বহু সংখ্যক স্নায়ুকোষ বা নিউরন নিয়ে স্নায়ুকলা গঠিত। নিউরনই নষ্ট স্নায়ুতন্ত্রের গঠন ও কার্যকরী একক। স্নায়ুকলা মানবদেহের বিভিন্ন কাজ সঠিকভাবে পরিচালনার মাধ্যমে মানবদেহকে সুস্থ রাখে। এটি মূলত দেহের বিভিন্ন অঙ্গের কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। চলাফেরা করার সময় হাত ও পায়ের সংকোচন প্রসারণে, মুখমন্ডলের সঞ্চালনে নিউরনের প্রত্যক্ষ ভূমিকা রয়েছে। 

এছাড়াও স্নায়ুকলা উদ্দীপনা অনুসারে উপযুক্ত প্রতিবেদন সৃষ্টি করে এবং তা বাস্তবায়ন করে। শুধু তাই নয় স্নায়ুকলা বিভিন্ন অঙ্গের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে। ফলে দেহের ভারসাম্য রক্ষিত হয়। সুতরাং উপরের আলোচনা থেকে সহজেই বুঝা যায় যে মানবদেহের জন্য স্নায়ুকলা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তাই কোনো কারণে যদি স্নায়ুকোষটি তার কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে তাহলে মানবদেহে তার সামগ্রিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলবে। মানুষ চলাফেরা করতে পারবে না, খাবার খেতে পারবে না। সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না এমন কি স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলবে।

পরিশেষে বলা যায় স্নায়ুকোষ অর্থাৎ নিউরন তার কার্যকারিতা হারিয়ে ফেললে মানবদেহে জড় পদার্থের ন্যায় হয়ে যেতে পারে।

Read More: বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে mcq প্রশ্ন জেনে নিন [PDF]

জীববিজ্ঞান ১০ম অধ্যায় নোট

জীববিজ্ঞান সৃজনশীল প্রশ্ন ২

আরেফিন স্ট্যাপলার দিয়ে খাতা সেলাই করার সময় হাতের আঙ্গুলে শিন ফুটলে সে তাৎক্ষণিক হাতটিকে সরিয়ে ফেলল। অন্যদিকে তার পঞ্চাশোর্ধ বয়সী বাবার হাত ও পায়ের কাঁপুনি হওয়ার কারণে ঠিকমত পড়াহাটি করতে সমস্যা হয় এবং ঠিকমত লেখালেখি করতে পারে না।

ক. ফাইটোহরমোন কী?

খ. দিনের বেলায় উদ্ভিদ কান্ড সূর্যালোকের দিকে বেঁকে যায় কেন?

গ. আরেফিনের হাতের আঙ্গুলে সংঘটিত কার্যটি কীভাবে সম্পন্ন হয়? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. আরেফিনের বাবার রোগটি তাঁর ভবিষ্যত জীবনে কী ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে? বিশ্লেষণ কর।

জীববিজ্ঞান সৃজনশীল প্রশ্ন ২ উত্তর:

ক. উদ্ভিদদেহে উৎপাদিত যে রাসায়নিক পদার্থ উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও বিকাশ, বিভিন্ন অঙ্গ সৃষ্টি ইত্যাদি প্রভাবিত করে তাই হলো ■ ফাইটোহরমোন।

খ. দিনের বেলায় উদ্ভিদকাণ্ড সূর্যালোকের দিকে বেঁকে যাওয়ার কারণ হলো উদ্ভিদের বক্রচলন। ফটোট্রপিক চলন এক ধরনের বক্রচলন। উদ্ভিদের কান্ড এবং শাখা প্রশাখারও সবসময় আলোর দিকে চলন ঘটে। একে পজিটিভ ফটোট্রপিজম বলে। একারণেই দিনের ■ বেলায় উদ্ভিদ কান্ড সূর্যালোকের দিকে বেঁকে যায়।

গ. আরেফিনের হাতের আঙুলে পিন ফুটলে সে তাৎক্ষণিক হাতটিকে সরিয়ে ফেলে। তার হাতের আঙ্গুলে সংঘটিত এই কার্যটি প্রতিবর্তী ক্রিয়ার কারণে সংঘটিত হয়। নিচে ক্রিয়াটি ব্যাখ্যা করা হলো-

প্রতিবর্তী ক্রিয়া বলতে উদ্দীপনার আকস্মিক ও স্বয়ংক্রিয় প্রতিক্রিয়াকে বোঝায়। আমরা ইচ্ছা করলেই প্রতিবর্তী ক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। প্রতিবর্তী ক্রিয়া মূলত সুষুম্নাকাণ্ড দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। নিউরন মানবদেহের সকল কার্যাবলির নিয়ন্ত্রক। স্নায়ুটিস্যু বা নিউরন পরিবেশ থেকে উদ্দীপনা গ্রহণ করে দেহের ভিতরে পরিবাহিত করে। পরবর্তীতে গৃহীত উদ্দীপনা অনুযায়ী উপযুক্ত প্রতিবেদন সৃষ্টি করে এবং তা বাস্তবায়নও করে। স্নায়ুকাণ্ডের ধূসর অংশে অবস্থিত সংবেদী নিউরনের অ্যাক্সন থেকে তড়িৎ রাসায়নিক পদ্ধতিতে উদ্দীপনা মোটর ■ বা আজ্ঞাবাহী স্নায়ুর ডেনড্রাইটে প্রবেশ করে। 

সংবেদী স্নায়ুর অ্যাক্সন ও আজ্ঞাবাহী স্নায়ুর ডেনড্রাইটের মধ্যবর্তী সিন্যাপসের মধ্য দিয়ে এ উদ্দীপনা পেশিতে প্রবেশ করে। মোটর বা আজ্ঞাবাহী স্নায়ুর নিউরনের ডেনড্রাইট থেকে উদ্দীপনা পেশিতে পৌঁছলে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের নির্দেশে পেশির সংকোচন ঘটে। ফলে উদ্ভূত ক্রিয়াটির তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ঘটে।

আর এভাবেই প্রতিবর্তী ক্রিয়ার কারণেই আঙুলে পিন ফুটলে আরেফিন দ্রুত হাত সরিয়ে ফেলে।

সারকথা: প্রতিবর্তী ক্রিয়া বলতে উদ্দীপনার আকস্মিক ও স্বয়ংক্রিয় প্রতিক্রিয়াকে বোঝায়। প্রতিবর্তী ক্রিয়া মূলত সুষুম্নাকান্ড দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। আর নিউরন মানবদেহের সকল কার্যাবলির নিয়ন্ত্রক।

ঘ. উদ্দীপকে আরেফিনের বাবার রোগটি হলো পারকিনসন রোগ। পারকিনসন রোগ মস্তিষ্কের এমন এক অবস্থা, যার কারণে হাতে ও * পায়ে কাঁপুনি হয় এবং আক্রান্ত রোগীর নড়াচড়া, হাঁটাহাঁটি করতে সমস্যা হয়। এ রোগ সাধারণত ৫০ বছর বয়সের পরে হয়।

পারকিনসন রোগ ধীরে ধীরে প্রকটরূপে দেখা দেয়। এজন্য প্রাথমিক অবস্থায় রোগী হালকা হাত বা পা কাঁপা অবস্থায় থাকে। ফলে চলাফেরা বিঘ্নিত হয়। আরফিনের বাবার ভবিষ্যতে সমস্যা হিসেবে চোখের পাতার কাঁপুনি, কোষ্ঠকাঠিন্য, খাবার গিলতে কষ্ট হওয়া, সোজাসুজি হাঁটার সমস্যা, কথা বলার সমস্যা, মুখের বাচনভঙ্গি না আসা অর্থাৎ মুখ অনড় থাকা, মাংসপেশিতে টান পড়া বা ব্যথা হওয়া, নড়াচড়ায় কষ্ট হওয়া ইত্যাদি নানা ধরনের উপসর্গ দেখা দিবে।

অর্থাৎ, পারকিনসিন রোগটি আরেফিনের বাবার ভবিষ্যৎ জীবনে নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করে নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করবে।

সারকথা : পারকিনসন রোগ মস্তিষ্কের এমন এক অবস্থা, যেখানে হাতে ও পায়ের কাঁপুনি হয় এবং আক্রান্ত রোগীর নড়াচড়া, হাঁটাহাঁটি করতে সমস্যা হয়। এ রোগ সাধারণত ৫০ বছর বয়সের পরে হয়।

জীববিজ্ঞান দশম অধ্যায় : সমন্বয়

Read More: অধ্যবসায় রচনা

জীববিজ্ঞান সৃজনশীল প্রশ্ন ৩

হঠাৎ করে আঙুলে সুচ ফুটলে আমরা দ্রুত হাতটি উদ্দীপনার স্থান থেকে সরিয়ে নেই। আমরা এই ব্যথা অনুভব করি একটা বিশেষ টিস্যুর মাধ্যমে এবং এই ঘটনাটি একটা আকস্মিক ক্রিয়া দ্বারা ঘটে।

ক. প্রত্নতত্ত্ববিদ্যা কী?

খ. অ্যান্টিবায়োসিস বলতে কী বোঝায়?

গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত টিস্যুটির গাঠনিক ও কার্যকরী এককের সচিত্র বর্ণনা দাও। ৩

ঘ. উদ্দীপকে উল্লেখিত আকস্মিক ঘটনাটি একটি বিশেষ ক্রিয়া দ্বারা সম্পন্ন হয়- বিশ্লেষণ কর।

জীববিজ্ঞান সৃজনশীল ৩ প্রশ্নের উত্তর

ক. প্রাগৈতিহাসিক জীবের বিবরণ এবং জীবাশ্ম সম্পর্কিত বিজ্ঞানই হলো প্রত্নতত্ত্ববিদ্যা।

খ. একটি জীব কর্তৃক সৃষ্ট জৈব রাসায়নিক পদার্থের কারণে যদি অন্য জীবের বৃদ্ধি ও বিকাশ আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে বাধাপ্রাপ্ত হয় অথবা মৃত্যু ঘটে তবে সেই প্রক্রিয়াকে অ্যান্টিবায়োসিস বলে। অণুজীবজগতে এ ধরনের সম্পর্ক অনেক বেশি দেখা যায়।

গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত টিস্যুটি হলো স্নায়ুটিস্যু। স্নায়ুটিস্যুর গাঠনিক ও কার্যকরী এককের নাম নিউরন। নিচে নিউরনের সচিত্র বর্ণনা করা হলো-

১. কোষদেহ: প্লাজমামেমব্রেন, সাইটোপ্লাজম ও নিউক্লিয়াস সমন্বয়ে গঠিত নিউরনের গোলাকার, তারকাকার অথবা ডিম্বাকার অংশ কোষদেহ নামে পরিচিত। সাইটোপ্লাজমে মাইটোকন্ড্রিয়া, গলজিবস্তু, লাইসোজোম, চর্বি, গ্লাইকোজেন, রঞ্জক কণাসহ অসংখ্য নিসল দানা থাকে।

২. প্রলম্বিত অংশ: কোষদেহ থেকে সৃষ্ট শাখা-প্রশাখাকেই প্রলম্বিত অংশ বলে। প্রলম্বিত অংশ ডেনড্রাইট ও অ্যাক্সন নিয়ে গঠিত। কোষদেহের চারদিকে শাখাযুক্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রলম্বিত অংশকে ডেনড্রাইট বলে। একটি নিউরনে ডেনড্রাইটের সংখ্যা শূন্য থেকে কয়েকটা পর্যন্ত হতে পারে।

কোষদেহ থেকে উৎপন্ন বেশ লম্বা শাখাবিহীন তন্তুটির নাম । অ্যক্সন। এর চারদিকে নিউরিলেমা নামক পাতলা আবরণ থাকে। নিউরিলেমা পরিবেষ্টিত অ্যাক্সনকে স্নায়ুতন্ত্র বলে।

নিউরিলেমা ও অ্যাক্সনের মধ্যবর্তী অঞ্চলে স্নেহ পদার্থের একটি স্তর থাকে। একে মায়োলিন বলে। এ আবরণীটি অবিচ্ছিন্ন নয়। নির্দিষ্ট দূরত্ব পর পর এটি সাধারণত বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকে। এ বিচ্ছিন্ন অংশে নিউরিলেমার সাথে অ্যাক্সনের প্রত্যক্ষ স্পর্শ ঘটে। এ আবরণীবিহীন অংশটিকে র‍্যানভিয়ারের পর্ব বলে। অ্যাক্সনের মূল অক্ষের আবরণীকে অ্যাক্সিলেমা বলে।

সারকথা: স্নায়ুটিস্যুর গাঠনিক ও কার্যকরী এককের নাম নিউরন। নিউরনের দেহ দুটি অংশে বিভক্ত। যথা- কোষদেহ ও প্রলম্বিত অংশ।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লেখিত আকস্মিক ঘটনাটি অর্থাৎ আঙুলে সূচ ফুটলে হাত সরিয়ে নেওয়া মূলত প্রতিবর্তী ক্রিয়া। নিচে তা বিশ্লেষণ করা হলো- প্রতিবর্তী ক্রিয়া বলতে উদ্দীপনার আকস্মিক ও স্বয়ংক্রিয় প্রতিক্রিয়াকে বোঝায়। আমরা ইচ্ছা করলেই প্রতিবর্তী ক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। 

প্রতিবর্তী ক্রিয়া মূলত সুষুম্নাকাণ্ড দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। আর নিউরন মানবদেহের সকল কার্যাবলির নিয়ন্ত্রক। স্নায়ুটিস্যু বা নিউরন পরিবেশ থেকে উদ্দীপনা গ্রহণ করে দেহের ভিতরে পরিবাহিত করে। পরবর্তীতে গৃহীত উদ্দীপনা অনুযায়ী উপযুক্ত প্রতিবেদন সৃষ্টি করে এবং তা বাস্তবায়নও করে। 

স্নায়ুকাণ্ডের ধূসর অংশে অবস্থিত সংবেদী নিউরনের অ্যাক্সন থেকে তড়িৎ রাসায়নিক পদ্ধতিতে উদ্দীপনা মোটর- বা আজ্ঞাবাহী স্নায়ুর ডেনড্রাইটে প্রবেশ করে। সংবেদী স্নায়ুর অ্যাক্সন ও আজ্ঞাবাহী স্নায়ুর ডেনড্রাইটের মধ্যবর্তী সিন্যাপসের মধ্য দিয়ে এ উদ্দীপনা পেশিতে প্রবেশ করে। 

মোটর বা আজ্ঞাবাহী স্নায়ুর নিউরনের ডেনড্রাইট থেকে উদ্দীপনা পেশিতে পৌঁছলে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের নি নির্দেশে পেশির সংকোচন ঘটে। ফলে উদ্ভূত ক্রিয়াটির তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ঘটে।

সারকথা : প্রতিবর্তী ক্রিয়া বলতে উদ্দীপনার আকস্মিক ও স্বয়ংক্রিয় কে প্রক্রিয়াকে বোঝায়। আমরা ইচ্ছা করলেই প্রতিবর্তী ক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। প্রতিবর্তী ক্রিয়া মূলত সুঘুন্নাকান্ড দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।

PDF নবম শ্রেণির জীববিজ্ঞান: ১০ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন

জীববিজ্ঞান সৃজনশীল প্রশ্ন ৪

রফিক সাহেব ইদানীং প্রায়ই ক্লান্তি বোধ করেন। তিনি লক্ষ করলেন তার ক্ষুধা, পিপাসা দুই-ই বেড়ে গেছে। ক্ষতস্থান সহজে শুকাতে চায় না। শরীরের ত্বক রুক্ষ হচ্ছে। এ অবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শে তিনি। রক্ত পরীক্ষা করান এবং এতে একটি রোগ ধরা পড়ে। ডাক্তার বলেন, ভয়ের কিছু নেই। নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপনেই এ রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।

ক. এপিলেপসি কী?

খ. প্রতিবর্তী ক্রিয়া বলতে কী বুঝায়?

গ. রফিক সাহেবের রোগটি হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।

ঘ. ডাক্তারের শেষোক্ত কথাটির যথার্থতা মূল্যায়ন কর।

Read more : নবম ও দশম শ্রেণি : রসায়ন একাদশ অধ্যায় : খনিজ সম্পদ জীবাশ্ম সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

জীববিজ্ঞান সৃজনশীল ৪ প্রশ্নের উত্তর

ক. এপিলেপসি মস্তিষ্কের একটি রোগ যাতে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর খিঁচুনী বা কাঁপুনি দিতে থাকে।

খ. প্রতিবর্তী ক্রিয়া বলতে উদ্দীপনার আকস্মিকতা ও স্বয়ংক্রিয় প্রতিক্রিয়াকে বুঝায়। হঠাৎ করে আঙ্গুলে সুচ ফুটলে অথবা হাতে গরম কিছু পড়লে আমরা অতিদ্রুত হাতটি উদ্দীপনার স্থান থেকে সরিয়ে নেই। এটি প্রতিবর্তী ক্রিয়ার ফল। প্রতিবর্তী ক্রিয়া মূলত সুষুন্না কান্ড দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বর্ণনা হতে বুঝা যায় যে, রফিক সাহেব 'ডায়াবেটিস' নামক রোগে আক্রান্ত। নিচে ডায়াবেটিস রোগ হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করা হলো-

অগ্ন্যাশয়ের ভিতর আইলেটস অব ল্যাঙ্গারহ্যানস নামক এক প্রকার গ্রন্থি আছে। এ গ্রন্থি থেকে ইনসুলিন নিঃসৃত হয়। ইনসুলিন হলো এক প্রকার হরমোন যা দেহের শর্করা পরিপাক নিয়ন্ত্রণ করে। অগ্ন্যাশয়ে যদি প্রয়োজন মতো ইনসুলিন তৈরি না হয় তবে রক্তে শর্করার পরিমাণ স্থায়ীভাবে বেড়ে যায়, প্রস্রাবের সাথে গ্লুকোজ নির্গত হয়। এ অবস্থাকে বহুমূত্র বা ডায়াবেটিস মেলিটাস বলে। 

ডায়াবেটিস দুই ধরনের হয়ে থাকে। যথা: টাইপ-১, টাইপ-২। টাইপ-১ এ আক্রান্ত রোগীর দেহে একেবারেই ইনসুলিন তৈরি হয় না। টাইপ-২ রোগীর দেহে আংশিকভাবে ইনসুলিন তৈরি হয়। এ রোগটি সাধারণত বংশগত ও পরিবেশের প্রভাবে হয়ে থাকে। রক্তে ও প্রস্রাবে গ্লুকোজের মাত্রা পরিমাণের চেয়ে বেড়ে গেলে এ রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়।

পরিশেষে বলা যায় যে, রফিক সাহেবের দেহে ইনসুলিন উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে বা আংশিক উৎপন্ন হচ্ছে ফলে তিনি ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।

সারকথা: অগ্ন্যাশয়ে যদি প্রয়োজন মতো ইনসুলিন তৈরি না হয় তবে রক্তে শর্করার পরিমাণ স্থায়ীভাবে বেড়ে যায়, প্রস্রাবের সাথে গ্লুকোজ নির্গত হয়। এ অবস্থাকে বহুমূত্র বা ডায়াবেটিস মেলিটাস বলে।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত রোগটি হলো 'ডায়াবেটিস'। চিকিৎসা দ্বারা ■ 'ডায়াবেটিস' রোগ একেবারে নিরাময় করা যায় না। কিন্তু এ রোগ ■ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। ডাক্তারদের মতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য তিনটি 'D' মেনে চলা অত্যাবশ্যক। এগুলো হলো- Discipline, Diet ও Dose। নিচে এগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:

১. শৃঙ্খলা (Discipline): একজন ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য তার সুশৃঙ্খল জীবন ব্যবস্থা মহৌষধস্বরূপ। এছাড়া নিয়মিত ও ডাক্তারের পরামর্শমতো পরিমিত খাদ্য গ্রহণ করা, নিয়মিত ব্যায়াম করা, রোগীর দেহের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও বিশেষভাবে পায়ের যত্ন নেওয়া, নিয়মিত প্রস্রাব পরীক্ষা করা এবং দৈহিক কোনো জটিলতা দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া।

২. খাদ্য নিয়ন্ত্রণ (Diet): ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের প্রধান উপায় হলো খাদ্য নিয়ন্ত্রণ করা। মিষ্টিজাতীয় খাবার পরিহার করা ও ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ও সময়মতো খাদ্য গ্রহণ করা। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাবারের মেনু অনুসরণ করলে সুফল পাওয়া যায়।

৩. ঔষধ সেবন (Drug): ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ঔষধ সেবন করা উচিত নয়। ডাক্তার রোগীর শারীরিক অবস্থা বুঝে ঔষধ খাওয়া বা ইনসুলিন নেওয়ার পরামর্শ দেন। সেই পরামর্শ অনুযায়ী রোগীকে নিয়মিত ঔষধ সেবন করতে হবে। ঠিকমতো চিকিৎসা না করা হলে রোগীর শ্বসন হার কমে যায়, পানি স্বল্পতার কারণে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়। এতে রোগী বেহুশ হয়ে পড়ে। অনেক সময় রোগীর হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু হতে পারে।

উপরের আলোচনা থেকে বলা যায়, ডাক্তারের শেষোক্ত কথাটি যথার্থ ছিল

নবম ও দশম শ্রেণীর জীববিজ্ঞান জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর ১০ম অধ্যায়

১. কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের অংশ কয়টি?

উত্তর: কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের অংশ দুইটি।

২. গুরুমস্তিষ্কের কোথায় ধূসরবস্তু থাকে?

উত্তর: বাইরের অংশে ধূসরবস্তু থাকে গুরুমস্তিষ্কের ।

৩. স্নায়ুতন্ত্রের কাজ কয়টি পর্যায়ে সম্পন্ন হয়?

উত্তর: স্নায়ুতন্ত্রের চারটি কাজ পর্যায়ে সম্পন্ন হয়

৪. মেরুরজ্জীয় স্নায়ুর সংখ্যা কত?

উত্তর: মেরুরজ্জীয় স্নায়ুর সংখ্যা ৩১ জোড়া।

৫. পনসের অবস্থান কোথায়?

উত্তর: মধ্য মস্তিষ্কের পেছনে।

৬. অক্সিন কী?

উত্তর: অক্সিন হলো একটি ফাইটো হরমোন যা ভ্রণ মুকুলাবরণীর অগ্রভাগে পাওয়া যায়।

৭. অগ্রমুকুল কী?

নবম ও দশম শ্রেণীর জীববিজ্ঞান জ্ঞানমূলক প্রশ্ন

উত্তর: উদ্ভিদের কাণ্ডের একেবারে শীর্ষ অঞ্চল হলো অগ্রমুকুল।

৮. কাকে গুরু মস্তিষ্ক বলা হয়?

উত্তর: গুরু মস্তিষ্ক বলা হয় সেরিব্রামকে ।

৯. উদ্ভিদে আলো-অন্ধকার ছন্দ কাকে বলে?

উত্তর: উদ্ভিদের ফুল ধারণে আলো-অন্ধকার বা দিনরাতের দৈর্ঘ্যের প্রভাবকে উদ্ভিদে আলো-অন্ধকার ছন্দ বলে।

১০. উদ্ভিদের প্রধান বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রক হরমোন কোনটি?

উত্তর: হরমোন অক্সিন উদ্ভিদের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রক প্রধান।

১১. অক্সিনের দুটি উৎস উল্লেখ কর?

উত্তর: ১. ভ্রুণমুকুলাবরণী ২. কাণ্ড ও মূলের অগ্রস্থ ভাজক টিস্যু।

১২. কোন হরমোন উদ্ভিদের ফুল ফুটাতে সাহায্য করে?

উত্তর: উদ্ভিদের ফুল ফুটাতে সাহায্য করে ফ্লোরিজেন হরমোন ।

১৩. একটি গ্যাসীয় উদ্ভিদ হরমোনের নাম উল্লেখ কর।

উত্তর: ইথিলিন।

১৪. উদ্ভিদের ট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণ করে কোন হরমোন?

উত্তর: অক্সিন হরমোন উদ্ভিদের ট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণ করে।

নবম-দশম শ্রেণির জীববিজ্ঞান ১০ম অধ্যায় (সমন্বয়)

১৫.নিউরনের প্রধান অংশ কয়টি?

উত্তর: নিউরনের প্রধান অংশ তিনটি।

১৬. সিন্যাপস কী?

উত্তর: সিন্যাপস একটি নিউরনের অ্যাক্সনের সাথে অন্য একটি নিউরনের ডেনড্রনের সংযোগস্থল।

১৭. ডেনড্রাইট কী?

উত্তর: ডেনড্রাইট কোষদেহের চারদিকের শাখাযুক্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রলম্বিত অংশ।

New comments are not allowed.*

Previous Post Next Post