রমজান মাসে সারাদিন এনার্জি পেতে যা খাবেন। রমজান ও আপনার স্বাস্থ্য

যদিও এখন হালকা ঠান্ডা ও হালকা গরম পরেছে কিন্তু এ সময় রোজা রেখে সুস্থ থাকাটা বেশ চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে উঠেছে। কারণ বিশ্বের কোন মানুষেরই আবহাওয়ার উপর হাত থাকে না। তাই আপনি আপনার খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমিক রোজার মাসে পেতে পারেন স্বস্তি ও প্রশান্তি।

রমজান মাসে সারাদিন এনার্জি পেতে যা খাবেন
{getToc} $title={Table of Contents} $count={Boolean}

এজন্য আপনাকে সেহেরীতে খেতে হবে বেশ কিছু উত্তম খাবার। ইফতার ও সেহরিতে আপনাকে এড়িয়ে চলতে হবে কিছু খাবার। আবার কিছু খাবার খেলে আপনি ১৫ ঘণ্টা রোজা রাখার কিছুটা সহজ হবে বলে আমরা আশা করি। রমজান মাসে সারাদিন এনার্জি পেতে কি কি খাবেন সেই সম্পর্কে আজকে আর্টিকেলে আমরা নিচে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

রোজায় পরিমিত ও পুষ্টিকর খাবার

খেজুর

প্রতিদিন ইফতারের অবশ্যই খেজুর খাবেন। খেজুর থেকে ৬৬% ক্যালারি পাওয়া যায়।খাবারের শর্করা, চিনি,ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম,সোডিয়াম, ফসফরাস,আয়রন, কপার,পাওয়া যায়। খেজুর সারাদিন রোজার পর ইফতারের খুবই দরকারি। সেই সাথে আপনি সেহেরীতে খেজুর খেতে পারেন। সেহেরিতে খাবারের শেষে দুটি খেজুর খেলে আপনি রোজার দিন সারাদিন অনেকটা সাপোর্ট পাবেন যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী।

দই

ইফতারে প্রতিদিন দুই আর চিড়া মিশিয়ে খেতে পারেন। দই ও চিড়া আপনাকে রোজার একটা স্বস্তি দিবে। এতে সারাদিনের আপনার ক্ষুধার্ত পেট একটু শান্তি পাবে এবং হজম শক্তি বাড়বে। প্রতিদিন এই দই থেকে আপনি 257 পরিমাণ ক্যালরি পাবেন। যা রমজান মাসে সারাদিন এনার্জি পেতে সাহায্য করবে।

ডাব

আমরা অনেকেই রমজান মাসে ইফতারের সময় অনেক বেশি পানি খেয়ে থাকি। যা আমাদের শরীরের জন্য মোটেও ভালো না। 

কারণ আমরা ইফতারের অনেক খাবার খেয়ে থাকি তখন যদি অতিরিক্ত পরিমাণে পানি পান করা হয় তাহলে এই পানীয় খাবার মিলে এক ধরনের অস্বস্তি তৈরি করে। তাই ইফতারের পর থেকে সেহেরি পর্যন্ত ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত যা রমজান মাসে সারাদিন এনার্জি পেতে সাহায্য করবে।

স্যালাইন

যাদের অতিমাত্রায় উচ্চ রক্তচাপ ও প্রেসার জাতীয় সমস্যা আছে বা নানা ধরনের রোগের সমস্যা আছে তারা রমজান মাসে ইফতারের পর থেকে সেহরি পর্যন্ত গ্লুকোজ বা স্যালাইন পান করতে পারে যা তাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী হবে। এক্ষেত্রে তারা রমজান মাসে সারাদিন শরীরে এনার্জি পেতে পারে।

পর্যাপ্ত পরিমাণে সুষম খাবার আহরণ

প্রতিদিন রমজান মাসে সেহেরী এবং ইফতারে আপনার পর্যাপ্ত পরিমাণে সুষম খাবার থাকতে হবে। আমিশ,শর্করা, ফ্যাট, ভিটামিন, দুধ, কলা,ফাইবার ইত্যাদি জাতীয় সুষম খাবার আপনাকে খেতে হবে। এই খাবারগুলা ক্যালোরি খুবই কম যা আপনার হজম শক্তিতে কোন বাধা সৃষ্টি করবে না। 

যার কারনে আপনার খুধা অনেক দেরিতে লাগবে। এবং রক্তে চীনের পরিমাপ ও তাড়াতাড়ি বারবেনা। সেহরিতে আমরা অনেকেই অনেক সময় বেশি খাবার খেয়ে ফেলি এইটা ভেবে যে সারাদিন তো কিছু খেতে পারব না। সে ক্ষেত্রে বয়স ভেদে আপনাদের অনেকের অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং দেখা দিয়েও থাকে। 

এর থেকে দেখা যায় যে রমজান মাসের শেষে অনেকেরই ওজন বেড়ে যায়। তাই বলব সারাদিন খেতে পারবেন না বলে ইচ্ছামতো খাবেন না এতে আপনার শরীরের জন্যই ক্ষতিকর। আপনার পেটের সম্পূর্ণ জায়গার এক চতুর্থাংশ খালি রাখবেন এতে করে আপনি রোজার পরেও সুস্থ থাকবেন।

কাঁচা ছোলা

রমজান মাসে ইফতারের সময় কাঁচা ছোলা খুবই পুষ্টিকর এক জাতীয় খাবার। এটি ইফতার ব্যতীত অন্য সময়ের জন্য খুবই পুষ্টিকর খাবার। ইফতারে ভাজা বড়া কম রেখে কাঁচা ছোলা পরিমাণে বেশি রাখতে পারেন। 

কারণ ২৫ থেকে ৩০ গ্রাম ছোলায় ১০০ ক্যালরি থাকে। কিন্তু আবার এই ২৫ থেকে ৩০ গ্রাম ছোলায় ফ্যাট থাকে ৫ গ্রাম। যা আপনার রক্তে চর্বি কমাতে সাহায্য করবে। ছোলা যদি আপনি ইফতারে এবং সেহরিতে খেয়ে থাকেন তবে বেশি না অল্প পরিমাণেও যদি খেয়ে থাকেন আপনি সারাদিনে অনেক শক্তি পাবেন। 

যদি আপনি কাঁচা ছোলা একবারে না খেতে পারেন তাহলে আপনি পেঁয়াজ, টমেটো,শসা, গাজর ইত্যাদি দিয়ে মাথা ঘুরাও খেতে পারেন এতে দেখবেন আপনার মুখে এক অন্যরকম স্বাদ অনুভূতি লাগবে। এই দারুন খাবারটি আপনার শরীরকে মুহূর্তে সতেজ করে তুলবে তার থেকে আপনি রমজান মাসে শরীরে অনেক এনার্জি পাবেন এবং রমজান মাস ব্যতীতও যদি এ খাবারটি আপনি খান আপনি সারাদিন অনেক এনার্জি পাবেন।

ফল

রমজান মাসে সারাদিন রোজার শেষে ইফতারে আপনি তিন থেকে চার রকমের ফল রাখতে পারেন এতে যেমন আপনার পুষ্টি ও বাড়বে তেমনি আপনার রুচিও আসবে। প্রতিদিন ১০০ গ্রাম ফল আপনার ৬৮ ৪৫ এবং ৩০ ক্যালোরি থাকে। 

যদি সারাদিন রোজার কারণে আপনি ফল এভাবে না খেতে পারেন তাহলে আপনি এটিকে জুসে এ রূপান্তর করেও খেতে পারেন। বিশেষ করে কলা, বাঙ্গিও আনার আপনি জুস করে খেতে পারেন এতে রোজার মাসে আপনি সারাদিনের এনার্জি পাবেন।

প্রোটিন

রমজান মাসে রোজার সময় আপনার শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি না দেখা দেয় তাই সেহেরিতে বা ইফতারে মুরগি, ঝোল, মাছ, চর্বিযুক্ত সামুদ্রিক মাছ, চামড়া সহ মাংস, চর্বি সহ মাংস এই জাতীয় খাবার গুলা খেতে পারেন। তবে আবার প্রতিবেলা মাংস খাওয়ার চেষ্টা করবেন না সাথে এক বেলা মাছ রাখবেন। 

যাদের গরুর মাংস খাসির মাংসে বাধা নিষেধ নেই তারা সেগুলোও খেতে পারেন। এতে করে আপনি রোজার মাসে সারাদিন অনেক এনার্জি পাবেন।

রমজান মাসে চাঙ্গা থাকতে আপনি পান করতে পারেন যে পানীয় সমূহ

পানি আমাদের শরীরে অনেক উপকারী বস্তু এবং কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আমরা সবাই জানি। তাই সেহরি এবং ইফতারের পরিমাণ মতো পানীয় পান করা অধিক গুরুত্বপূর্ণ যাতে আমাদের শরীরে পানির সঠিক মাত্রা বজায় থাকে।

রমজান মাসে চাঙ্গা থাকতে আপনি পান করতে পারেন যে পানীয় সমূহ

এই রোজার মাস আমাদের মুসলমান দের জন্য খুবই পবিত্র মাস তাই এ রোজার মাসে সকালে সেহেরী খেয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত পানি পান করা থেকে এবং খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হয়। এই রোজার মাসে পানি পান করা ছাড়া পুরো দিন কাটানো একটা চ্যালেঞ্জের বিষয়। তাই সেহেরী এবং ইফতারে পর্যাপ্ত পানি পান করা অধিক গুরুত্বপূর্ণ। যাতে আমাদের শরীরে পানের সঠিক মাত্রা বজায় থাকে।

এখন আমরা আলোচনা করব এই রোজার মাসের চাঙ্গা থাকতে তরল পানীয় যা আপনারা সেহেরী এবং ইফতারের রাখতে পারেন।

রুহ আফজা শরবত

এই রমজান মাসে আমরা সব থেকে রুহু আনসার শরবত বেশি পান করে থাকি। এটি একটি রিফ্রেশিং এবং সুগন্ধিযুক্ত পানি।এই পানি পান করলে এটি আপনাকে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত সতেজ রাখবে। এই শরবতে আরো মজাদার করতে এতে আপনি তরমুজের টুকরো এবং পুদিনা পাতা দিয়ে তৈরি করে খেতে পারেন যা আপনার থেকে আরো মজা লাগবে।

শরবত

এ রমজান মাসে ইফতার এবং সেহরিতে শরবতের আয়োজন করতে পারেন। এটি যে কোন কিছুর শরবত হতে পারে। লেবু, আম, ইত্যাদি এই শরবত পান করার ফলে আপনার শরীরে ৯০% পানির অভাব পূরণ হয়ে যাবে যা আপনাকে এই পুরো রোজার মাসে আপনাকে সতেজ রাখবে।এছাড়াও আপনি আপনার চেন উপায়ে শরবত তৈরি করে খেতে পারেন।

ফলের জুস

এই রমজান মাসে ফলের রস আপনাদের তৃষ্ণা নিবারণের একটি অসাধারণ পানি যা আমাদের শরীরকে এই রোজার দিনে চাঙ্গা করে তোলে। ফলের রসে পুষ্টি উপাদানে ভরপুর থাকে। এই রোজার মাসে আপনি আপনার পছন্দের যে কোন ফলের রসের জুস তৈরি করে নিতে পারেন। 

যেমন আম, তরমুজ, পেঁপে,কমলা, আঙ্গুর, লেবু ইত্যাদি। আবার এই সবগুলো ফল আপনার একসাথে জুড়ে একটি সুস্বাদু জুস তৈরি করে নিতে পারেন যা রোজার মাসে সারাদিন আপনাকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।এছাড়াও আপনি ডাবের পানি এবং ইত্যাদি জাতীয় ফলের পানি আহার করতে পারেন।

খাবার পানি

রমজান মাসে সারাদিন রোজা থাকার ফলে আমাদের শরীরে অনেক পানির ঘাটতি দেখা দেয়। তাই এই গরমে ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত ২-৩ লিটার পানি পান করা উচিত। যা পরে রোজার ভিতর আমাদের শরীরকে সতেজ রাখবে। এবং পরবর্তীতে এই পানির কারণে আমরা যখন ইফতার করব এখন আমাদের খাদ্য এবং হজম শক্তি কিভাবে। সচরাচর আমরা জানি যে পানি শরীরের ত্বকে স্বচ্ছ রাখে। তাই এ রোজার মাসে খাবার পানিকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

দুধ

আমরা জানি যে দুধ অতি পুষ্টিকর একটি খাদ্য। দুধে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও প্রোটিন যার কারনে আমরা সারাদিন রোজার পর যদি দুধ পান করি তা আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী হবে। মানবদেহে ফোনের অভাব পূরণ করতে দুধের কোন বিকল্প নেই। তাই রোজা ব্যতীত অন্যান্য দিনেও এক গ্লাস করে দুধ পান করুন। দুধ শরীরের মাংসপেশিকে শক্তিশালী এবং সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

রমজান মাসে পানির অভাব পূরণের সাথে সাথে যথেষ্ট সম্ভব চা,কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন তার সাথে অন্যান্য কোমল পানীয় যেমন অ্যালকোহল যুক্ত পানিও পান করা থেকে অধিক বিরত থাকুন এতে আপনি রোজা ছাড়াও অন্যান্য দিনে সুস্থ থাকবেন।

রমজান মাসে সেহেরীতে কোন ধরনের খাবার গুলো খাওয়া উত্তম

সেহেরীতে কোন ধরনের খাবার গুলো খাওয়া উত্তম

আমরা সকলেই জানি রোজা রাখার প্রথম প্রস্তুতি শুরু হচ্ছে সেহেরী দিয়ে। আই এই সেহেরীতে সঠিক ধরনের খাবার খাওয়া উচিত যা আমাদের সারাদিন আবার না খাওয়া থেকে এবং তার খুদার হাত থেকে মোকাবেলা করবে। এই মাসে আমাদের এমন খাবার গুলো সেহেরিতে খেতে হবে যেগুলা ভিটামিন, পুষ্টি, ক্যালোরি, ইত্যাদি সমৃদ্ধ খাবার যা আমাদের সারা দিনের এই রোজায় শক্তি যোগিয়ে রাখবে।

তবে তুরস্কের এক পুষ্টিবিদ বলেছেন এই সময় প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। আবার তিনি বলেছেন খুব ভারী না কিন্তু খাবারগুলা খেলে আপনার পেট ভরবে এরকম খাবার গুলো আপনাকে রোজার মাসে খেতে।

আবার অন্য এক পুষ্টিবিদ ব্রিজেড বেলনামের মনে করেন সেহেরিতে জটিল ধরনের শর্করা জাতীয় খাবার খাওয়া ভালো। বিশেষত হোলগেইন বা পূর্ণাঙ্গ ভাবে তৈরি কৃত শস্য। কারণ ওই সমস্ত খাবারগুলা ধীরে ধীরে আপনার শরীরে শক্তি সঞ্চয় করে যা রোজার মাসে সারাদিন আপনার শরীরকে শক্তি যোগাবে।

আমরা মনে করি এ রোজার মাসে লবণ জাতীয় পানি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত সেটা সেহেরী কিংবা ইফতার দুইটাইম এই। কারণ এটি আপনার খুদার পরিমাণ বাড়িয়ে দিবে। এবং আপনার তৃষ্ণার পরিমাণও পর্যাপ্ত পরিমাণে বাড়িয়ে দিবে।এই রোজার মাসে খাবারে এবং পানিতে ক্যাফেন আছে এমন খাবার ও পানি অপরিহার্য করা উচিত কারণ এটি একটি পবিত্র মাস।

রমজান মাসে ইফতারে কি খাবেন

অনেকের সারাদিন না খাওয়ার ফলে খুব ভারি খাবার দিয়ে ইফতার শুরু করেন এটি কিন্তু একদমই করা উচিত নয় কারণ সারাদিন না খাবার ফলে ভারি খাবার খেলে আপনার অসুস্থ এবং অস্বস্তি বোধ হতে থাকবে। রোজা ভাঙ্গার প্রথমে আপনাকে পানি খেয়ে বা খেজুর খেয়ে রোজা ভাঙতে হবে রোজা ভাঙ্গার পাশাপাশি আপনার শরীরে শক্তি সঞ্চয় এবং পানির ঘাটতি পূরণ করবে। 

দেশ ও সংস্কৃতি ভেদে আপনার ইফতারের খাবারগুলো বিভিন্ন রকম হতে পারে। যেমন বাংলাদেশে লোকেরা ইফতারে ভাজাবড়া বেশি খেয়ে থাকি যা মোটে শরীরের জন্য স্বাস্থ্যকর বিষয় না। আবার সেটা যদি অস্বাস্থ্যকর তেলে ভাজা হয় তাহলে তো আরোই ভালো না। বাংলাদেশে ইফতারে ভাজাবড়া খায় না এমন মানুষ খুঁজেই পাওয়া যাবে না। তাই তেমন খাবার একেবারেই বাদ না দিতে পারলে খুবই কম সংখ্যক অনুপাতে খেতে বলেছেন অনেক পুষ্টিবিদ বিশেষজ্ঞরা। 

তবে ইফতারটা ভারসাম্য মত হওয়া খুবই দরকারি। সেক্ষেত্রে অনেক বিশেষজ্ঞরা বলেন ইফতারের শুরুতে পানি এবং শেষে খেজুর খেয়ে প্রার্থনা শেষ করা উচিত। পরবর্তীতে বাকি খাওয়া-দাওয়া গুলা করা উচিত। সেটি যে কোন খাবারই হোক না কেন সেই খাবারে শর্করা জাতীয় খাবার ও সবজি জাতীয় খাবার যেন থাকে। 

উপরে আমরা সেইরকম অনেক খাবার নিয়েই আলোচনা করেছি যা থেকে আপনারা জানতে পারবেন ইফতারের সময় কোন কোন খাবারগুলি খাওয়া উত্তম।

রোজা রাখা কি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো?

রোজা রাখা আমার আপনার সকলের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। কারণ এখন অনেকেই ওজন কমানোর জন্য জিমে গিয়ে নানা ধরনের উপাদান ব্যবহার করেন এবং ওজন কমান। এবং অনেকেই তো ডায়েট চার্ট অনুযায়ী খাবার খেয়ে থাকেন। এই ডায়েট চার্ট অনুযায়ী আপনাকে একটা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত খাবার না খেয়ে থাকতে হয়। 

এবং প্রতিদিন কি খাবেন না খাবেন সেই দিকে খেয়াল রেখে খেতে হয়। এ সময় এটি অনুযায়ী আপনাকে চলতে আপনার শরীরের যে পরিমাণ চিনি আপনি জমিয়ে রাখেন সেটি আপনাকে ব্যবহার করে ফেলতে হয়। এবং আপনার শরীরে যে পরিমান চর্বি জমে থাকে সেটি গলতে শুরু করে এবং আপনার ওজন কমে যায়। এক গবেষণায় বিশেষজ্ঞরা দেখেছে এতে আপনার কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি নানা বিধি রোগ কমাতে সাহায্য করে। 

এখন আপনার কোলেস্ট্রল কমতে থাকে এতে করে আপনার শরীরে ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমতে থাকে। তাই বলা যায় রোজার মাসে রোজা থাকা ও আপনার ওই ডায়েট চাট এর মতই। তাই এর সুফলও আপনি অনেক বেশি পাবেন। তাই আমরা বলতে পারি রোজা রাখা আজকের জন্য অনেক উপকারী।

যখন রোজা রাখেন তখন আপনার শরীরে কি কি পরিবর্তন ঘটে?

রমজান মাসে সকলেই রোজা থাকে তবে হ্যাঁ কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনেকেই আবার রোজা রাখেনা। তবে এর রোজার মাসে শরীরের অনেক পরিবর্তন ঘটে।রোজা রাখার ফলে শরীরে কিরকম পরিবর্তন ঘটবে তা রোজা রাখার উপর নির্ভর করে। 

সেহেরী খাবার পরে শরীর অনেকটা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত উপবাসে থাকে। এর কারণে আপনার শরীর খাবার থেকে পুষ্টি শোষণ করে। যখন রোজা না থাকে তখন আপনার শরীর স্বাভাবিক ভাবেই যকৃ ও মাংসপেশিতে জমা থাকা বডি গ্লুকোজ শরীরের শক্তির প্রধান উৎস। রোজার সময় আমাদের শরীরে এই জমাকৃত গ্লুকোজ শক্তি। যোগাতে প্রথমে ব্যবহৃত হয়। 

আবার এই গ্লুকোজ শেষ হয়ে গেলেই শরীরে শক্তির পরিবর্তন উৎসাহ হয় ফ্যাট ও চর্বি। ফলে অনেকদিন উপবাসের জন্য শরীরের শক্তি প্রোটিন ভেঙে ফেলে। রোজায় কিছুদিন পর আপনার শরীরে রক্তে উচ্চমাত্রায় এন্ডোফিন উপস্থিত হয় যা আপনাকে অধিক সতর্ক করে মানসিক সুস্থতার অনুভূতি প্রদান করে।

রমজান মাসে রান্নার সময় কার্বন মনোক্সাইড পয়জনিং পরিহার

কার্বন মনোক্সাইড হচ্ছে এক ধরনের বিষাক্ত গ্যাস যা আপনার শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এই গ্যাসের কোন ঘ্রাণ বা সাদ নেই। এই গ্যাস যখন আপনার শ্বাস-প্রশ্বাসের ক্ষেত্র হিসেবে আপনার শরীরে প্রবেশ করবে তখন আপনি মারাও যেতে পারেন। 

রমজান মাসে যদি আপনার ঘরে অধিক পরিমাণ মানুষের জন্য আপনার রান্না করার প্রয়োজন হয় তাহলে গ্যাসের উপর অতিরিক্ত বড় ডেকচি দিয়ে রান্না করবেন না এবং চুলার পাশে ফয়েল রাখবেন না।

পরিশেষে আমরা বলতে পারি পবিত্র মাহে রমজান মাস তো শুরুই হয়ে গেল। রোজার মাসে অনেকে অসুস্থ থাকার পরেও রোজা পালন করে থাকে। আবার অনেক তো ধর্ম প্রাণ মুসলমানরাও রোজা পালন করতে গিয়ে অসুস্থ বোধ করেন। 

আমরা আজকে আমাদের এই আর্টিকেলে রোজা পালনের জন্য সঠিক খাবার, শারীরিক সুস্থতা, মানসিক শক্তি, বাড়বে এমন কিছু নিয়ম নীতি নিয়ে আলোচনা করেছি যা পড়লে আপনি বুঝতে পারবেন কিভাবে সুস্থভাবে রোজা পালন করবেন। এবং কি খাবার খেলে এবং কিভাবে রমজান মাসে সারাদিন এনার্জি পাবেন। 

আজকে আমরা আমাদের এই আর্টিকেল শেষ করলাম রোজার মাসে আরো বিশেষ বিশেষ কিছু খবর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে এই রিলেটেড আরো অনেক আর্টিকেল দেওয়া আছে সেগুলো পড়লেই আপনি বুঝতে পারবেন আপনি রোজার মাসে কিভাবে সুস্থ সতেজ থাকবেন।

Previous Post Next Post