মানব কল্যাণে বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানের জয়যাত্রা

মানব কল্যাণে বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানের জয়যাত্রা

আজকে আমরা এই আর্টিকেলে মানব কল্যাণে বিজ্ঞান রচনা সম্পর্কে জানব। কোন কোন ক্ষেত্রে মানব কল্যাণে বিজ্ঞান প্রয়োজন হয় সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করা হলো

মানব কল্যাণে বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানের জয়যাত্রা


{getToc} $title={Table of Contents} $count={Boolean}

মানব কল্যাণে বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানের জয়যাত্রা রচনা

প্রবন্ধ সংকেত

  1. ভূমিকা
  2. আধুনিকায়নের বিজ্ঞান
  3. বিজ্ঞানের বিস্ময় করা আবিষ্কার
  4. বিজ্ঞানীর আত্মত্যাগ
  5. মানবজীবনে বিজ্ঞানের বহুমাত্রিক অবদান
  6. নাগরিক সভ্যতায় বিজ্ঞান
  7. পরিবহন ও যোগাযোগ বিজ্ঞান
  8. দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান
  9. চিকিৎসা জগতে বিজ্ঞান
  10. শিল্প ক্ষেত্রে বিজ্ঞান
  11. মহাশূন্যের রহস্য উদঘাটনে বিজ্ঞান
  12. কৃষি ক্ষেত্রে বিজ্ঞান
  13. আবহাওয়া বিজ্ঞান
  14. অপকারিতা
  15. উপসংহার

মানব কল্যাণে বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানের জয়যাত্রা রচনা ১০ পয়েন্ট

মাটি থেকে কবর উৎপাত একসঙ্গে সবচেয়ে লম্বা দেবদারু
যেখানে তার শিকড় ছিল আগে সেই গর্তে ফেলব ছুড়ে আমাদের সব অস্ত্র।
ধরিত্রী গর্বে, ধরণী তলে,/ উদ্বোমোরা আমাদের সব অস্ত্র, মোরা চিরতরে দেব কবর তাকে সেই গভীরে।
পুতব আবার সেই জায়গায় দেবদারু
হ্যাঁ আসবে সময় মহাশক্তির।

মানব কল্যাণে বিজ্ঞান ভূমিকা

Science শব্দটির উৎপত্তি  'Scio' থেকে। 'Scio' অর্থ জানা বা শিক্ষা গ্রহন করা। বিজ্ঞান শব্দের শাব্দিক অর্থ বিশেষ জ্ঞান। বিজ্ঞানের দর্শনে পার্থিব জগতের নানা বিষয় নিয়ে গড়ে উঠেছে বিজ্ঞান জগত। আর বিজ্ঞানের এই জগত ক্রম বিবর্তনের মাধ্যমে আধুনিক সভ্য ইতিহাসের মণিকোঠায়।

আধুনিক যুগ বিজ্ঞানের যুগ। মানুষ ও তার জীবনদানকারী সভ্যতাকে অন্ধকার থেকে আলো নিয়ে এসেছে এই বিজ্ঞান। মানব কল্যাণে বিজ্ঞানের অবদান যে কত ব্যাপক তা প্রতিদিনের বিচিত্র অভিজ্ঞতা থেকে অনুভব করা যায়।

আরও পড়ুন:  বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে mcq প্রশ্ন জেনে নিন [PDF]

বিজ্ঞান আজ মানব জীবনের নিত্য সঙ্গী। আদিম যুগ থেকে আরম্ভ করে বর্তমান যুগ পর্যন্ত মানব সভ্যতা যে বিকাশ ঘটেছে তার মূলে রয়েছে বিজ্ঞান।

আধুনিকায়নের বিজ্ঞান

সভ্যতার ক্রমবিকাশের পথে অগ্রসর হয়ে বিজ্ঞান বর্তমানে পূর্ণরূপে সমৃদ্ধি লাভ করেছে। বিজ্ঞানের অসীম শক্তিতে মানুষ আজ প্রকৃতিকে যেন হাতের মুঠোয় এনে ফেলেছে। বিজ্ঞানের অভিযান শুরু হয়েছে সুদূর অতীতের কিন্তু ঊনবিংশ শতাব্দীতে এর অগ্রগতি অত্যন্ত বিস্ময়কর। বিংশ শতাব্দীতে উন্নতির চরম শিখরে আরোহন করেছে একবিংশ শতাব্দীতে এর অগ্রগতি ধারা অব্যাহত আছে।

বিজ্ঞানের বিস্ময় করা আবিষ্কার 

প্রাচীনকালে বিজ্ঞানের আলো থেকে বঞ্চিত মানুষ ছিল প্রকৃতির হাতে এক ক্রীনড় নক । গৃহবাসী সেই প্শুর সাদৃশ্য মানুষ যখন প্রথম পাথরে পাথর খষে আগুন জ্বালায় তখন থেকেই শুরু হয় মানুষের বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার। তারপর যেখানেই বাধার সম্মুখীন হয়েছে কোন সাহায্যের প্রয়োজন হয়েছে মানুষ ব্যবহার করেছে বিজ্ঞানকে।

আরও পড়ুন: অধ্যবসায় রচনা

বিজ্ঞানকে ব্যবহার করে মানুষ এখন সমগ্র পৃথিবীর উপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। মানব সমাজের যেদিকে দৃষ্টিপাত করা যায়, স্পষ্ট হয়ে ওঠে।বিজ্ঞানের বলে মানুষ অন্তরীক্ষ জয় করেছে। মানুষের সংকট নিবারনের ও সুখ স্বাচ্ছন্দ বিধানের অভাবনীয় কৌশল আবিষ্কার করেছে।বিদ্যুৎ আণবিক শক্তি কম্পিউটার বিজ্ঞানের বিস্ময় করা আবিষ্কার।

বিজ্ঞানীর আত্মত্যাগ

বিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে যুগ যুগ ধরে বহু বিজ্ঞানী নিরলস শ্রম মেধা সাধনা অধ্যবসায় জড়িত। জড়িত রয়েছে অনেক বিজ্ঞানীর আত্মত্যাগ। সত্য কথা বলেছিলেন বলে বিজ্ঞানী ব্রুনোকে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল ল্যাভয়সিয়কে কে কে হত্যা করা হয়েছিল গিলোটিন। 

মহান বিজ্ঞানী আর্কিমিডিস, কোপার্নিকাস, গ্যালিলিও প্রমুখ অসংখ্য বিজ্ঞানী তাদের সমগ্র জীবন বিজ্ঞানের পেছনে ব্যয় করেছেন।তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে বর্তমানে মানুষ উন্নীত হতে পেরেছি।

আরও পড়ুন: নবম ও দশম শ্রেণি : রসায়ন একাদশ অধ্যায় : খনিজ সম্পদ জীবাশ্ম সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

মানবজীবনে বিজ্ঞানের বহুমাত্রিক অবদান

সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত মানুষের প্রতিটি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে বিজ্ঞান জড়িত। মানব জীবনের বিজ্ঞান একই সূত্রে গ্রথিত। যাতায়াত কৃষি, শিক্ষা, চিকিৎসা, প্রকৌশল সহ জীবনের হাজারো ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের বিশাল ভূমিকা রয়েছে।

নাগরিক সভ্যতায় বিজ্ঞান

নাগরিক সভ্যতা সম্পূর্ণরূপে বিজ্ঞানের দান। বিজলী বাতিতে রাস্তাঘাট, বাড়ি ,ঘর সবকিছু ঝলমল করে। কয়েকটি বৈদ্যুতিক ছুইচে আঙ্গুলি চালানোর ফলে প্রত্যহর রান্না ইত্যাদি সবকিছুই সম্ভব হচ্ছে।

পরিবহন ও যোগাযোগ বিজ্ঞান 

যাত্রী নিয়ে আজ উড়োজাহাজ আকাশে ওড়ে, জলযান সমুদ্রে পাড়ি দেয় মাইল দূর থেকে মানুষের সংবাদ আদান-প্রদান করে টেলিগ্রাফ ও টেলিফোন। মোবাইল ফোন, ইমেইল, ইন্টারনেট এ সবই বিজ্ঞানের আশীর্বাদ।

আরও পড়ুন: নবম-দশম শ্রেণির জীববিজ্ঞান সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর – ১০ম অধ্যায় (সমন্বয়)

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান 

জীবনযাত্রা সকল দিকের স্বাচ্ছন্দ বিধানে বিজ্ঞান আজ নিয়োজিত। ব্যক্তি জীবনে প্রভাতী চা পানের সময় থেকে অফিসে গমনা গমন এবং নিদ্রার পূর্ব মুহূর্তে বিষয় সাচ্ছন্দ এনেছে বিজ্ঞান।

চিকিৎসা জগতে বিজ্ঞান 

চিকিৎসা জগতে বিজ্ঞান আজ যুগান্তর এনেছে। দুরারোগ্য ব্যাধিতে মৃত্যুর সংখ্যা আজ হ্রাস পেয়েছে। স্ট্রেপটোমাইসিন, পেনিসিলিন, প্রভৃতি আজ মৃত্যু পথযাত্রীকে দান করেছে নিশ্চিত বিশ্বাস ও আশা। কর্নিয়া, বৃক্ক, হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস এবং যকৃতের মত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপনের চিকিৎসা বিজ্ঞানের সাম্প্রতিক সাফল্য অভাবনীয়। 

চিকিৎসা বিজ্ঞানে ফাইবার অপটিক্স ব্যবহারের ফলে মানবদেহের অভ্যন্তরস্থ ফুসফুস, বৃহদন্ত্র, ক্ষুদ্রান্ত, শিরা, ধমনী ইত্যাদির অবস্থা যন্ত্রের সাহায্যে অবলোকন করে নির্ভুলভাবে রোগ নির্ণয় করা যায়। শুধু তাই নয় অপটিক্স ফাইবার সংবলিত বিভিন্ন যন্ত্রের সাহায্যে ক্যান্সার নির্ণয়ের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা যায়। 

অতি কম্পনশীল শব্দ ও লেজারকে কাজে লাগিয়ে চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিপ্লব সাধন করেছে। এর ফলে শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গ যেমন দেখা যাচ্ছে তেমনি মূত্রথলি ও পিত্তকোষের পাথর চূর্ণ করাও যাচ্ছে।

শিল্প ক্ষেত্রে বিজ্ঞান

শিল্প কারখানায় পূর্বে সমস্ত কাজই হাতে করা হতো। বিজ্ঞানের বলে আজ সেসব কাজ যন্ত্র দ্বারা করানো হচ্ছে। ফলে খরচ কম পড়ছে, সময় কম ব্যয় হচ্ছে এবং অধিক উৎপাদন হচ্ছে।

মহাশূন্যের রহস্য উদঘাটনে বিজ্ঞান 

মানুষের কৌতুহলী মন আজ বিজ্ঞানের বলে মহাশূন্যের রহস্য উদঘাটনে ব্যাপৃত হয়েছে।মানুষ চাঁদে, মঙ্গল গ্রহে অভিযান চালিয়েছে। 

মানুষ বিভিন্ন গ্রহ সম্পর্কে জ্ঞান আহরণের জন্য মহাশূন্যে বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করছে।মহাকাশে পাঠিয়েছে বিভিন্ন উপগ্রহ, রোবট ও অত্যাধুনিক ইলেকট্রনিক্স সরঞ্জাম।

শিক্ষা ও জ্ঞান বিস্তারে বিজ্ঞান

মুদ্রণযন্ত্র, ক্যালকুলেটর, কাগজ ও জ্ঞান আহরণের জন্য সংবাদপত্র ও পুস্তকাদি সবই বিজ্ঞানের দান। চলচ্চিত্র, বেতার যন্ত্র ও টেলিভিশন প্রভৃতি যেমন মানুষকে অফুরন্ত আনন্দ দিচ্ছে তেমনি শিক্ষা প্রসারের ক্ষেত্রে বিপ্লব এনেছে। 

কম্পিউটার বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় যুক্ত করেছে এক নতুন শিক্ষা পদ্ধতি। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন শিক্ষামূলক প্রোগ্রাম ব্যবহার করে এখন কম্পিউটারে শিখতে পারছে অসংখ্য জিনিস।

কৃষি ক্ষেত্রে বিজ্ঞান

আধুনিক বিজ্ঞান কৃষি ক্ষেত্রে অশেষ কল্যাণ সাধন করে আসছে। লাঙ্গলের পরিবর্তে আজ ব্যবহৃত হচ্ছে উন্নত মানের কলের লাঙ্গল ও ট্রাক্টর। আবর্জনা ও গোবরের সঙ্গে ব্যবহৃত হচ্ছে আধুনিক রাসায়নিক সার।

গবেষণার মাধ্যমে উন্নতমানের বীজ সরবরাহ করা হচ্ছে। উন্নতমানের উদ্ভিদ উৎপাদন করা হচ্ছে। কৃষি ক্ষেত্রেও বিজ্ঞান মহা বিপ্লব এনেছে।

আবহাওয়া বিজ্ঞান 

বিজ্ঞানীরা মহাকাশে প্রেরণ করেছে কৃত্রিম উপগ্রহ। আবহাওয়ার খবরাখবর মুহুর্তেই নির্ভুলভাবে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। ভূ-উপগ্রহের মাধ্যমে খনিজ সম্পদ তেল মাটির উপাদান ও জলজ সম্পদ সম্পর্কে জানা যাচ্ছে।

আরও পড়ুন:  মেট্রোরেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান

অপকারিতা

বিজ্ঞান কেবল আশীর্বাদই বহন করে আনে না, অভিশাপ ও বহন করে থাকে। হাইড্রোজেন বোমা, ডিনামাইট, ট্যাংক ইত্যাদি আবিষ্কারের ফলে মানব জীবনে বিজ্ঞান আশীর্বাদ না হয়ে অভিশাপে পরিণত হয়েছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকা কর্তৃক হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে নিক্ষিপ্ত বোমা ও তার ধ্বংসলীলা এর জ্বলন্ত প্রমাণ।

আরও পড়ুন: আমি কিংবদন্তির কথা বলছি কবিতার (MCQ) প্রশ্ন ও উত্তর

উপসংহার 

অনেকে বিজ্ঞানের বিভীষিকা সৃষ্টিশক্তি ও ধ্বংসাত্মক ক্ষমতার পরিচয় পেয়ে দোষারোপ করছেন। কিন্তু বিজ্ঞানী মানুষকে পর্যায়ক্রমে শান্তি ও সমৃদ্ধি দিয়েছে। মানুষের সভ্যতা কে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত করেছে বিজ্ঞান। 

মানুষ যদি তার শক্তির অপব্যবহার না করে শুভ বুদ্ধির দ্বারা চালিত হয় সভ্যতার বিকাশে কাজে লাগায় তবে অভিশাপ না হয় আশীর্বাদই হবে। আধুনিক জীবনে বিজ্ঞান ছাড়া মানুষের পক্ষে এক মুহূর্তও চলা সম্ভবপর নয়।

Previous Post Next Post