বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বা রূপসী বাংলাদেশ

বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বা রূপসী বাংলাদেশ

আজকে আমরা এই আর্টিকেলে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বা রূপসী বাংলাদেশ রচনা সম্পর্কে জানব। যা আপনাদের পরীক্ষাতে কাজে আসবে। নিম্নে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বা রূপসী বাংলাদেশ রচনা সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করা হলো ।
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বা রূপসী বাংলাদেশ


{getToc} $title={Table of Contents} $count={Boolean}

ভূমিকা 

অপরূপ প্রাকৃতির সৌন্দর্যের সোমবারে পরিপূর্ণ আমাদের এই বাংলাদেশ। এদেশের মতো বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পৃথিবীর আর কোন দেশে নেই। এদেশের সুজলা-সুফলা শস্য শ্যামলা প্রকৃতিক সৌন্দর্যে আমাদের নয়ন মনের তৃষ্ণা মিটে। শ্রেষ্ঠ কবিরা কত অপূর্ব সুন্দর কবিতা ও গান রচনা করেছেন কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের কবিতায় এদেশের প্রাকৃতিক আপন বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে।

ধনধান্যে পুষ্পে ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা 
তাহার মাঝে আছে দেশের সকল দেশের সেরা 
ও সে স্বপ্ন দিয়ে তৈরি সে দেশ স্মৃতি দিয়ে ঘেরা

বাংলাদেশের ভূপ্রকৃতি রূপ 

বাংলাদেশের পৃথিবীর বৃহত্তর দ্বীপ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক লীলাভূমি আমাদের জন্মভূমি। এদেশে রয়েছে উঁচু নিচু পাহাড় সুনীল সাগর আটঘাট রুদ্রকার জল সুনীল আকাশ যা এক অপূর্ব সৌন্দর্যে সৃষ্টি করেছে। 

নদী বৌদ্ধ তো সরসভূমি বলেই হয়তো এখানে অনাহয় এসে অসংখ্য বৃক্ষ জন্মে। যা এক অপূর্ব চিত্রহারী সৌন্দর্যের সৃষ্টি করেছে। বিভিন্ন অঞ্চল ভেদে প্রকৃতি আলাদা সৌন্দর্য লক্ষ্যণীয়। ভাওয়াল দুপুর ও লালমাই পাহাড়ের জারি ও শালবন চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চল উত্তরের পাহাড় সিলেটের চা বাগান দক্ষিণে সুন্দরবন আর দ্বীপগুলো অপূর্ব সুষমণ্ডিত। 

দক্ষিণ এবং বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে উঠে থাকা দীপু ভূমি নারকেলের সুপারি বাগানের শোনা যায় বাতাসের মধুর গু সমুদ্রে উত্তাল গর্জনে ভেসে আসে অব্যক্ত ভাষার ছন্দময়তা।, কবি জীবনানন্দ দাশ তার ভাষায় বলেছেন।

Read more: অধ্যবসায় রচনা

বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি 
তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাইনা আর 
চারিদিকে চেয়ে দেখি পল্লবের, হিজলের অশোক্ষের পরে আছে চুপ।

পল্লী বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য  

গ্রাম বাংলার সৌন্দর্য এদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। ২৭ হাজারেরও বেশি গ্রাম রয়েছে আমাদের এই বাংলাদেশ। এদেশের মাঠে মাঠে সোনার ফসল ফলে। গ্রামে গ্রামে আম কাঁঠাল চাল নারকেল সুপারি খেজুর গাছের শাড়ি। প্রকৃতি এইখানে অক কৃপণ। যেন সৌন্দর্যের হাট বসেছে পল্লী। যেদিকে চোখ যায় কেবল অন্তহীন সবুজের সমাহার। 

তৃষ্ণার্ত চোখের নেশা ঢেউরে যায়। মনে হয় বিচিত্র বেশি প্রকৃতি যেন তার সৌন্দর্যে মিশে যেতে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। শ্যামলী বৃক্ষের সভা আর ছায়া স্নিগ্ধ পল্লী কুটির গুলো যেন শীতল পরশ দিয়ে ভালোবেসে সবাইকে আপন করে নেয়। মাঠে মাঠে রাখালের গরু চরানো আর মাতাল বাঁশির সুর উদাস দুপুর কে ভাসিয়ে দেয়। কোথাও কোথাও পায়ে চলার পথের উপর বাস ঝার অবাধ্য সংগীতে নিয়ে পড়েছে। মাঠের মধ্যে বিচিত্র শোভা পায়। স্তব্ধ অতল দিঘির কালো জল আর আকাশের নীলে যেন বন্ধুত্বের মেলা বসে। পল্লী মায়ের আঁচলে সোনা ঝরে। 

সে আঁচলের পরশে বাংলার মানুষের জীবনেও আছে সুখ শান্তি ও প্রশান্তি। বাংলার পল্লীতে জারী শাড়ি ভাটিয়ালি সুরের এক অকৃত্রিম বন্ধন। সে বন্ধন যেন নদীর কল ধোনির সঙ্গে একাকার হয়ে বেজে ওঠে। এদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুগ্ধ করে বাংলার কবি লেখক বাউল ও চিত্রকদের তাইতো কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন।

আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি 
চিরদিন তোমার আকাশ তোমার বাতাস আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি।

বাংলাদেশের নদ নদীর সৌন্দর্য 

এদেশের প্রকৃতিতে নদ-নদীযুক্ত করেছে সৌন্দর্যের নতুন মাত্রা প্রকৃতির কোলের তরঙ্গের সুর তুলে রুপালি নদী বয়ে চলে অবিরত। পদ্মা মেঘনা, যমুনা, সুরমা, মধুমতি, ধলেশ্বরী, ইচ্ছামতী, কর্ণফুলী, বুড়িগঙ্গা আরো কত মধুর নামে নদীর ধারা বহমান এই বাংলাদেশ। 

তাইতো নদীর সঙ্গে দেশের মানুষের গভীর মিতালী, নদী এ দেশের মানুষের জীবন ও জীবিকার সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাছাড়া নদীর বুকে সূর্যাস্তের প্রতিচ্ছবি পান গৌড়ীয়, মাছরাঙ্গা কখনো নদীর বুকে বেঁচে চলার তাল পাতার নৌকা অপূর্ব সভা এক নমনিভার সৌন্দর্যের সৃষ্টি করে।

Read more : বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে mcq প্রশ্ন জেনে নিন [PDF] 

সন্ধ্যায় জেলের নৌকার মিটিমিটি করে জলে ওঠা বাতিগুলো দেখে মনে হয় যেন নদীর বুকে আলোর মিছিল ছুটেছে। নদীর দুই তীর সৌন্দর্য দারুন মনোর। বিভিন্ন নদ নদী বাহিত পলি মাটিতে বাংলাদেশের যেমন রয়েছে সে শস্য শ্যামল আর নদীর রুদ্ররূপ ধারণ হয়ে ওঠে উত্তাল। কঠরে কোমরে নদীর বিভিন্ন রূপ আলাদা হলেও রহমান নদীর কৃষি প্রধান বাংলার আশীর্বাদ শুরুপ।

বাংলার উল্লেখযোগ্য পর্যটন স্থান 

কর্ম ক্লান্ত জীবনের অবসরে মানুষ পরিচ্ছন্ন মনের খোরাক জোগাতে কখনো প্রকৃতির মাঝে অপার শান্তি খুঁজে নিতে চায়। প্রকৃতিক রূপ আর ঐশ্বর্যের হাত বাড়িয়ে দেয় মানুষের দিকে। প্রকৃতি ও মানুষের ভালোবাসা সেতুবন্ধন রচনা করে এদেশের পর্যটন স্থানগুলো। 

সৌন্দর্যময় আমাদের মাতৃভূমি যুগ যুগ ধরেই বিদেশি পর্যটকদের কাছে অনেক আকর্ষণীয় এদেশের পাহাড়পুর মহাস্থানগড় ময়নামতি ও হৃদয়ে মিশে থাকা সব পর্যটন কেন্দ্র খুব সহজে পর্যটকদের আকর্ষণ করে।

বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলে সৌন্দর্য 

বাংলাদেশ কক্সবাজারে রয়েছে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত যা দৈর্ঘ্য ১২০ কিলোমিটার। এর একদিকে পাহাড় অন্যদিকে সমুদ্রের নীল জনরাশি মনের জায়গায় রোমাঞ্চকর অনু। পটুয়াখালী জেলায় রয়েছে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত যেখান থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্য একই জায়গা থেকে অনুভব করা যায়। 

এসব সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থী সমাগম ঘটে। এমনকি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিবছর অসংখ্য পর্যটক আসে এবং সৈকত দেখতে। সাগর সৈকতের অনাবিল সৌন্দর্য সকলের নজর কেড়ে নেয়।

কবি সাহিত্যিকের ভাষায় বাংলার রূপ সৌন্দর্য 

বাংলার প্রাকৃতিক রূপে ঐশ্বর্য পরিপূর্ণ প্রকৃতি আয়োজন ভাবুক হৃদয় মুগ্ধ দৃষ্টি অনন্ত সৌন্দর্য উদাহার বইয়ে দেয়। প্রকৃতির নানা রঙের আবহাওয়াকে আপন মনের অনুভবে রাঙিয়ে তোলেন কবি সাহিত্যিকরা। বিদেশ থেকেই শৈশবের নদীকে ভুলতে পারেনি কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত। 

কপোতাক্ষ নদের জলকে তিনি তুলনা করেছেন মাতৃদুগ্ধের সঙ্গে। আর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এদেশের জন্মগ্রহণ করে বলেই সার্থক জনম আমার জন্মেছি এ দেশে। কবি দ্বিজেন্দ্রলাল গাইলেন - এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি সকল দেশের রানী সে যে আমার জন্ম। কবি জসীমউদ্দীন গাইলেন - কবিতা আর এদেশে দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ বর্ণনা বনাঞ্চল ও নদীকেন্দ্রিক মানুষের জীবন ও জীবিকা অতুলনীয় রূপ ফুটিয়ে তুলেছেন।

Read more : মাসি পিসি গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

জীবনানন্দ দাশ এদেশের রূপে মুগ্ধ হয়ে মৃত্যুর পরেও আবার ফিরে আসার বাসনা ব্যক্ত করেন। এদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যেই বিমুখ ধ সাহিত্যিকরা নিজের অনুভব প্রকাশ করেছেন কথা কবিতায় যেখানে প্রকৃতি সাহিত্যর উপাদান হিসেবে কাজ করছে।

উপসংহার 

বাংলাদেশের মানুষ সৌন্দর্য প্রেমী। প্রকৃতি রাজ্য বিশাল সম্ভার সৌন্দর্য পিপাসু মানুষের চোখের ক্ষুধা ও মনের খোদা দুটোই মেটায়। এক দিকে প্রাকৃতিক অপার সৌন্দর্য যেমন মানুষকে করে স্নিগ্ধ কোমল অনুভূতি প্রবণ আবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ এদেশের মানুষকে করে সাহসী ও সংগ্রামী। সব মিলিয়ে রূপসী বাংলার রূপ মাধুর্য ঐশ্বর্যা এদেশে মুগ্ধ মানুষ।

Previous Post Next Post