সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম

সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম

প্রতিবেদন বলতে সাধারণত বুঝা যায় কোন নির্দিষ্ট বিষয় বা ঘটনা সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় তথ্য সংবলিত ভিত্তিক একপ্রকার বিবরণী। সংবাদ প্রতিবেদনের ইংরেজি অর্থ হচ্ছে রিপোর্ট। আর যিনি এই প্রতিবেদন রচনা করেন তাকে বলা হয় প্রতিবেদক। একজন প্রতিবেদকের দায়িত্ব হল কোন ঘটনার বিবরণী বর্ণনা করে তার উপর একটি তথ্যাবলী তৈরি করা।

সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম

 {getToc} $title={Table of Contents} $count={Boolean}

প্রতিবেদক তার তথ্যাবলির সমস্ত ঘটনা খুঁটিনাটি অনুসন্ধানের পর তৈরি করে। মূলত সংবাদপত্র বা সংবাদপত্র তৈরীর মাধ্যমে যে তথ্যগুলি প্রকাশ করা হয় তাকে সংবাদ বলে। সংবাদের মাধ্যমে একজন পাঠক তার সুনির্দিষ্ট তথ্যাবলী জনগণের সামনে প্রকাশ করে। সংবাদপত্র বা ম্যাগাজিন প্রকাশের জন্য যে প্রতিবেদন গুলো তৈরি করায় তাই সংবাদ প্রতিবেদন। 

একটি শিরোনাম লেখার পর আসে প্রতিবেদকের সংক্ষিপ্ত পরিচয়। এই অংশে প্রতিবেদকের নাম বা পদবী, ঘটনা বা প্রতিবেদন তৈরির স্থান লিখতে হয়। এরপর নিচে দুই তিন লাইন করে ঘটনার একটি বিবরণী সংক্ষিপ্ত আকারে লিখতে হয়। তারপর যেতে হবে বিস্তারিত স্তরে।

সংবাদ প্রতিবেদনের কাঠামো 

সংবাদ প্রতিবেদনে বিভিন্ন কাঠামো রয়েছে। যেগুলো একেক করে এক নিয়ম অনুসারে লিখতে হয়। এগুলো নিয়ে মানুষের না দেখলে একটি সংবাদ প্রতিবেদন কাঠামো তৈরি হয় না। নিচে আমরা সংবাদ প্রতিবেদন কাঠামোগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব এর থেকে আমরা বুঝতে পারবো সংবাদ প্রতিবেদন কিভাবে লিখতে হয়।

শিরোনাম :

প্রতিবেদন যে বিষয়ে লেখা হবে সে বিষয়ে ভালোভাবে প্রকাশ করা যায় এমন একটি শিরোনাম পুরোপুরিভাবে লিখতে হবে। শিরোনামটি কোনভাবেই বড় করা যাবে না। যতটুকু লাইনে সংবাদ প্রতিবেদনের জন্য একটি শিরোনাম লেখা উচিত ঠিক সেই রকমই শিরোনাম লিখতে হবে।

ভূমিকা :

ভূমিকার অংশে খবরের মূল বা তিন চার লাইনের ভিতরে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলতে হবে যাতে এই ঘটনাটি কি নিয়ে লিখছে সেটি সুন্দরভাবে বুঝা যায়। ওই অংশে বিশেষভাবে গুরুত্ব বহন করে কারণ ওই অংশ যদি আকর্ষণীয় তাহলে পাঠক মূল বিষয়বস্তু পড়তে আগ্রহী হবে না। তাই পাঠকের আগ্রহ ধরে রাখার জন্য ভূমিকার অংশে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হবে।

সূত্র :

কোন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্যই মূলত প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। সে বিজ্ঞপ্তি লেখা সূত্রের এই অংশে লিখতে হবে।

ব্যক্তি নাম পরিহার করা :

প্রতিবেদনে ব্যক্তির নাম পরিহার করতে হবে। ব্যক্তির নামের পরবর্তীতে তার পদমর্যাদা তুলে ধরা যাবে যেমন : সচিব, পুলিশ, শিক্ষক ইত্যাদি। সাধারণ পরিচয় এর ক্ষেত্রে যেমন : কর্মকর্তা, কারখানার শ্রমিক ইত্যাদি। ভুক্তভোগীর নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক ব্যক্তির নামের পরিবর্তে এই সকল বিষয়বস্তু লিখতে হয়। এতে করে সংবাদ আলোচ্য ঘটনার সাথে ব্যক্তির বোধগম্য পরিলক্ষিত হয়।

বিবিধ তথ্য :

সংবাদ প্রতিবেদনের জন্য স্থান, কাল ইত্যাদি তথ্য যথাযথভাবে দিতে থাকতে হবে।

সংবাদপত্র প্রকাশের জন্য প্রতিবেদন লেখার নিয়ম :

বৃক্ষরোপন বিষয়ক সংবাদ প্রতিবেদন
২৮শে সেপ্টেম্বর, ২০২২
বরাবর
সাধারণ সম্পাদক
প্রথম আলো
কারওয়ান বাজার, ঢাকা
বিষয়: বৃক্ষরোপণ বিষয়ক প্রতিবেদনে।

জনাব,

এই যে, আপনার জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে আপনার সম্পাদিত এবং বহুল প্রচলিত পত্রিকা প্রথম আলো তে "গাছ লাগান, পরিবেশ বাঁচান" শীর্ষক প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে জনসাধারণের মধ্যে কাজ লাগানোর আগ্রহ সৃষ্টি করার মাধ্যমে আপনার একান্তভাবে মর্জি কামনা করছি।

নিবেদক
মো. রাহুল ইসলাম
ডিঙ্গেদহ, চুয়াডাঙ্গা
গাছ লাগান, পরিবেশ বাঁচান ,

অক্সিজেন ছাড়া আমরা এক মুহূর্তও বাঁচতে পারি না। আমাদের জীব জগতের সকল প্রাণীর খাবারের অন্যতম উৎস গাছ। গাছ আমাদেরকে বিশাল বিশাল ঝড়ের কবল থেকে বাঁচায়। আবার যথাসময়ে বৃষ্টি হতে সাহায্য করে। গাছ পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড কমিয়ে অক্সিজেন বাড়াচ্ছে। যার কারণে পৃথিবী আমাদের বাসযোগ্য হয়ে রয়েছে।

গাছ আমাদের পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইডসহ সকল বিষাক্ত গ্যাস শুষে নিয়ে অক্সিজেন ছাড়ছে। যদি গাছ পৃথিবী থেকে কমে যায় তাহলে কোন পরিস্থিতিতে আমরা পড়ব, তা নিশ্চয় আন্দাজ করতে পারছি। এত কিছু বোঝা সত্ত্বেও আমরা অবিবেচকের মতো গাছ কাটছি। হ্যাঁ, গাছ আমাদের প্রয়োজন এক-দুটো কাটা লাগতেই পারে কিন্তু তার বিনিময়ে আমাদের আরো দুই-চারটা করে গাছ লাগানো উচিত। অর্থাৎ একটা গাছ কাটলে তার বদলে দুইটা গাছ লাগানো উচিত।

আমাদের পৃথিবী গাছে সবুজ থাকলে পৃথিবী সুস্থ থাকবে। সর্বোপরি, আমরা সুস্থ থাকব। কিন্তু আমরা গাছ লাগানোর প্রতি খুবই উদাসীন। গাছ ব্যতীত আমাদের অস্তিত্ব অকল্পনীয়। তাই, নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। বেশি বেশি করে গাছ লাগাতে হবে। বিভিন্ন বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির মাধ্যমে গাছের সংখ্যা বাড়াতে হবে , এক অংশ জায়গাও যেন খালি না থাকে। যেখানে একটু ফাঁকা থাকবে, সেখানেই একটি গাছ লাগানো উচিত। তাহলে আমাদের চারপাশের পরিবেশ সুস্থ থাকবে।

প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি। সর্বোপরি, জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে। তাই আবারো বলি- "গাছ লাগান, পরিবেশ বাঁচান।

নিবেদক
মো.রাহুল ইসলাম (সকল এলাকাবাসীর পক্ষ হতে)
ডিঙ্গেদহ, চুয়াডাঙ্গা
উপরে উল্লিখিত সকল প্রতিবেদনের শেষে একটা খাম যুক্ত করতে হবে।

সারসংক্ষেপ

উপরোক্ত সকল বিষয়বস্তু পড়া শেষে আমরা সংবাদপত্রের কিভাবে প্রতিবেদনীপুর সে সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছি। এ ধারণাটি আপনাদের অনেক উপকার রাখতে পারে। বিশেষ করে স্কুলে পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীর জন্য এই বিষয়বস্তু পরীক্ষায় আসতে পারে। আপনারা যদি এরকম আর অন্যান্য কোন বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটটি অবশ্যই খুলে দেখবেন। আর যদি অন্য কোন কিছু জানা থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্ট বক্সে জানাবেন আমরা আপনাদের প্রশ্ন অনুযায়ী তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করব।

New comments are not allowed.*

Previous Post Next Post