মধু খাওয়ার নিয়ম-মধু খাওয়ার উপযুক্ত সময় কখন জেনে নিন

মধু খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি মধুর রয়েছে অনেক উপকারী গুণ। সেই প্রাচীনকাল থেকেই মধু বিভিন্ন ভেষজ ঔষধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। মানুষের সুস্বাস্থ্যের জন্য এই মধু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। মানবদেহের ওজন নিয়ন্ত্রণ, রক্তশূন্যতা, লিভারের সমস্যা, রূপচর্চার জন্য মধুর রয়েছে জুড়ি মেলা ভার।

আপনি চাইলে এই মধু দিনের যেকোনো সময়ে খেতে পারেন। তবে দিনের বেশ কিছু অংশ আছে যে সময়গুলোতে মধু খেলে আপনি পাবেন এক চমৎকার উপকারিতা। এছাড়াও স্বাস্থ্যকে একেবারে টগবগে রাখতে, এবং নিজের যৌবনকে ধরে রাখতে এমন কিছু নিয়মে আছে যে নিয়মে মধু সেবন করলে চল্লিশার্ধ বয়সেও আপনাকে দেখাবে একেবারে ১৬ বছরের কিশোরীর মত।

প্রিয় পাঠক আপনি যদি মধু খাওয়ার উপকারিতা এবং মধু খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই উপকারী হতে চলেছে। কারণ আজকের আর্টিকেলে আমি আলোচনা করব মধু খাওয়ার উপযুক্ত সময় কখন অর্থাৎ মধু খাওয়ার নিয়ম।তাই অবশ্যই এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইলো।


প্রিয় পাঠক আপনি যদি মধু খাওয়ার উপকারিতা এবং মধু খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই উপকারী হতে চলেছে। কারণ আজকের আর্টিকেলে আমি আলোচনা করব মধু খাওয়ার উপযুক্ত সময় কখন অর্থাৎ মধু খাওয়ার নিয়ম।তাই অবশ্যই এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইলো।


{getToc} $title={Table of Contents} $count={Boolean}

মধু খাওয়ার উপকারিতা

আমরা যদি একটি পুষ্টি সম্পন্ন খাবারের তালিকা করি তাহলে সেই তালিকার শুরুতেই রাখা উচিত মধু। কারণ এই মধু সেবনের মাধ্যমে শরীরের অনেক রোগ বালাই থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত।

এই মধুতে আছে প্রায় ৪৫টি খাদ্য উপাদান। যে ফুলটি থেকে মধু উৎপন্ন হয় সেই ফুলের পরাগের মধুতে থাকে ২৫ থেকে ৩৭ শতাংশ এর মত গ্লুকোজ, আরও থাকে ৩৪ থেকে ৪৩ শতাংশ ফ্রুক্টোজ এবং ০.৫ থেকে ৩.০ শতাংশ এর মত সুক্রোজ এবং থাকে ৫ থেকে ১২ শতাংশ এর মত মন্টোজ। এছাড়াও আরও রয়েছে আরও ২২ শতাংশ পরিমান অ্যামাইনো অ্যাসিড, খনিজ লবন আছে ২৮ শতাংশ। আর সবচেয়ে ভালো দিক হচ্ছে মধুতে চর্বি ও প্রোটিন নেই। প্রতি ১০০ গ্রাম মধুতে থাকে ২৮৮ ক্যালোরি। মধু খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানার আগে এবার জানব মধু খাওয়ার উপকারিতাঃ

  • মানবদেহের শক্তি সঞ্চার করে: মধু হলো এক ধরনের শক্তি প্রদায়ী খাদ্য। মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে তাপ ও শক্তির উৎস। আর তাই মধু সেবন করার ফলে শরীরে তাপ ও শক্তির উৎপন্ন হয়। যা শরীরকে সুস্থ রাখে।
  • হজম শক্তি বৃদ্ধি করে: মধুতে যে পরিমান শর্করা থাকে, তা খুব সহজেই হজম হয়। কারণ এই মধুতে আছে ডেক্সট্রিন, যা মানবদেহে সরাসরি রক্তে প্রবেশ করে এবং তাৎক্ষণিকভাবেই তার কার্যকলাপ শুরু করে দেয়।
  • রক্তশূন্যতা দূর করে: মধু তে রয়েছে খুব বেশি পরিমাণে কপার, লৌহ ও ম্যাঙ্গানিজ। যা রক্তের হিমোগ্লোবিন গঠনে সহায়তা করে। যার ফলে রক্তশূন্যতা দূর হয়।
  • ফুসফুসের রোগ ও শ্বাসকষ্ট দূর করে: প্রাচীনকাল থেকেই বলা হয়ে থাকে যে ফুসফুসের যাবতীয় রোগের একমাত্র সমাধান হলো মধু। আর তা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। জ্বর কিংবা ঠান্ডা জনিত কারণে যখনই প্রচুর পরিমানে কাশি হয়, তখন তুলসীপাতা কিংবা লেবুর সাথে কিছুটা পরিমাণ মধু মিশিয়ে গরম পানির সাথে সেবন করলে খুব দ্রুতই সেই কাশিও সেরে ওঠে। এর পাশাপাশি ফুসফুসের যে রোগের পাদুর্ভাব থাকে তাও দূর হয়।
  • যৌন দুর্বলতা দূর করতে: পুরুষদের যৌন দুর্বলতা দূর করতে মধুর সাহায্য করে। পুরুষদের মধ্যে যাদের মধ্যে যৌন দুর্বলতা রয়েছে, তারা যদি প্রতিদিনই মধুর সাথে ছোলা মিশিয়ে খান তাহলে খুব উপকার পাবেন। কারণ দুটির মধ্যেই যৌন দুর্বলতা দূর করার উপাদান আছে। এছাড়া বাদাম এবং দুধের সাথে মধু যদি মিক্স করে খাওয়া যায়, এটিও যৌন দুর্বলতা দূর করতে সাহায্য করে।
  • মধু পাকস্থলীর সুস্থতায়: মধু খেলে পাকস্থলীর কাজ অনেক জোরালো হয় এবং এটি পেটে খাবারের হজমের গোলমাল দূর করে। মধু খেলে পেটের মধ্যে হাইড্রোক্রলিক এসিড ক্ষরণ কমে যায়, যার ফলে অরুচি, বমি, বুক জ্বালা এগুলো দূর হয়।
  • তাপ উৎপাদন করে: মধু একটি তাপ উৎপাদনকারী উপাকারী উপাদান। যা শীতের সময় খেলে শরীর একেবারে গরম হয়ে যায়।
  • দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে: মধু মানব দেহের চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে ভূমিকা পালন করে। গাজরের সঙ্গে যদি কেউ মধু মিশিয়ে খায় তাহলে তার দৃষ্টিশক্তি বাড়বে।
  • রূপচর্চায়: মধু ছেলে মেয়ে উভয়ের ত্বকের জন্যই খুব উপকারী একটি উপাদান। এটি ত্বকের মসৃণতা বৃদ্ধির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


ইসলামে মধু খাওয়ার নিয়ম

মধু খাওয়ার নিয়ম কি সে সম্পর্কে জানার পাশাপাশি অনেকেই জানতে চাই যে ইসলামে মধু খাওয়ার নিয়ম কি? অর্থাৎ মধু খাওয়া সম্পর্কে ইসলাম ঠিক কি বলে?

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা মধু সম্পর্কে এক আয়াতে বলেন:

মুত্তাকিদের যে জান্নাতের ওয়াদা দেওয়া হয়েছে তার দৃষ্টান্ত হলো, তাতে রয়েছে নির্মল পানির নহর, দুধের ঝরনা, যার স্বাদ পরিবর্তিত হয়নি, পানকারীদের জন্য সুস্বাদু সুরার নহর এবং আছে পরিশোধিত মধু এর ঝরনা।’ (সুরাঃ মুহাম্মদ, আয়াতঃ ১৫)


এছাড়া মধু সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা

সূরা নাহলের ৬৮-৬৯ নাম্বার আয়াতে বলেন, “তোমার রব মৌমাছির প্রতি ইলহাম করেছেন যে পাহাড়ে, গাছে আর উঁচু চালে বাসা তৈরি করো। অতঃপর তুমি প্রত্যেক ফল থেকে আহার করো এবং তুমি তোমার রবের সহজ পথ ধরে চলো। আর তার পেট থেকে এমন পানীয় বের হয়, যার রং ভিন্ন ভিন্ন, যাতে রয়েছে মানুষের জন্য রোগ নিরাময়। নিশ্চয়ই এতে নিদর্শন আছে ওই জাতির জন্য, যারা চিন্তা করে দেখে”।

অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা নিজেই পবিত্র কুরআনে মধু সম্পর্কে বলেছেন যে এই মধুর মধ্যে রয়েছে অনেক উপকারী গুনাগুন। এছাড়াও আমরা হাদিসে দেখতে পাই যে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মৃত্যু ছাড়া সকল রোগের ঔষধ হলো মধু ও কালোজিরা। অর্থাৎ কোন ব্যক্তি যদি মধু এবং কালোজিরা একসাথে খেতে পারে তাহলে মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগ থেকেই সে সমাধান লাভ করবে।

ইসলামে মধু খাওয়ার নিয়ম হলো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তরিকায় মধু খাওয়া। যেহেতু রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম হাদিসে বলে দিয়েছেন মধু ও কালোজিরা মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের ঔষধ, সুতরাং ইসলামিক নিয়ম অনুযায়ী দেখতে গেলে মধুর সাথে কালোজিরা মিশিয়ে খেলে এটি খুবই উপকারী।



যষ্টি মধু খাওয়ার নিয়ম

অনেকেই হয়ত যষ্টিমধু নাম শুনলেই মনে করেন যে এটি হয়তবা বিশেষ এক ধরনের মধু! তবে মূলত, এই যষ্টিমধু হল এক প্রকার গাছের শেকড়। এবং এই গাছের শেকড় থেকে মিষ্টি স্বাদ পাওয়া যায়। মুলত গ্লাইসাইররিজা গ্লাবরা বা বাংলায় যষ্টিমধু গাছের শেকড়কে বলা হয় যষ্টিমধু। মধু খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানার পাশাপাশি অনেকেরই জানার আগ্রহ থাকে যে যষ্টি মধু খাওয়ার নিয়ম। যেভাবে খাবেন যষ্টিমধু:

  • যষ্টিমধু ফুটন্ত পানিতে পরিমাণমতো ভিজিয়ে রাখুন। এরপর ঠান্ডা করে তরল মধুর সঙ্গে মিশিয়ে পান করতে পারেন।
  • বেশ কিছুক্ষণ গরম দুধের মধ্যে মিশিয়ে তা পান করতে পারেন।
  • পরিমাণমত শুধু গুঁড়ো করেও খাওয়া যেতে পারে।
  • লিকার চায়ে দিয়ে পান করা যায়।
  • শুধুমাত্র যষ্টিমধু গাছের শেকড় চিবিয়ে রস খেতে পারেন।

রাতে মধু খাওয়ার নিয়ম

মধু খাওয়ার নিয়ম কেমন? মূলত মধু খাবার অনেক নিয়ম আছে। এর মধ্যে একটি নিয়ম হলো রাতে মধু খাওয়ার নিয়ম। রাতের বেলা মধু সেবনের অনেক উপকারিতা আছে। রাতে মধু খাওয়ার নিয়ম হিসেবে আপনি রাতের খাবার খাওয়ার ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা পর ঘুমাতে যাওয়ার আগ মুহূর্তে হালকা কুশুম গরম পানিতে ১ থেকে ২ চামচ পরিমান মধু মিশিয়ে নিবেন। এবং তা খাবেন।

এর ফলে আপনার দেহের রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। যার ফলে আপনার রাতের ঘুম ভালো হবে। এছাড়া আপনার যদি অতিরিক্ত ওজন হয়ে থাকে তাহলে আপনি প্রতিদিন রাতে কয়েক ফোঁটা লেবুর রসের সাথে ১ চামচ মধু মিশিয়ে খেলে আপনার শরীরের অতিরিক্ত মেদ বা চর্বি কমতে থাকবে। এর সাথে দুশ্চিন্তা, মানসিক চাপও কমবে। প্রতিদিন ঘুমানোর এক ঘন্টা আগে মধু খেলে খুবই ভালো হবে

বয়স্কদের মধু খাওয়ার নিয়ম

বয়স বাড়ার সাথে সাথেই বয়স্ক মানুষদের যাবতীয় স্মৃতিশক্তিও কমতে থাকে। তবে বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা মধু নিয়মিত পান করে এসেছেন তাদের স্মৃতিশক্তির ক্ষয় তেমন একটা হয়নি। এর পাশাপাশি মধুর অনন্য উপকারিতার জন্য তাদের দৈহিক সকল গঠনও অনেক ভালো থাকে।

মূলত যারা বয়স্ক আছেন তাদের মধু খাওয়ার নিয়ম ঠিক আলাদা না হলেও বেশ কিছু বিষয় নজর রাখতে হবে। সাধারণ ৬০ থেকে ৭০ বছরের বয়স্কদের প্রতিদিন সকালবেলা ১০ গ্রাম বা ১ থেকে ২ চা চামচ পরিমাণ মধু খেতে দিলে ফুসফুসের সমস্যা বা কাশি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

বয়স্কদের মধু খাওয়ার নিয়ম হলো গরম পানির সাথে খালি পেটে, চা বা কফির সাথে, টোস্ট, দই বা এর সাথে খেতে পারেন। অনেকেই ঝাল তরকারি রান্না করলে খেতে পান না সে ক্ষেত্রে তরকারির মধ্যে হালকা মিষ্টি ভাব আনার জন্য মধু ব্যবহার করা যেতে পারে এটি বয়স্কদের জন্য অনেক মজাদার হবে। এছাড়া বৃদ্ধদের প্রতিদিন সকালে খাবার পরে এক গ্লাস গরম দুধের সাথে মধু খেতে দিতে হবে৷ এতে করে তাদের হজমশক্তি বৃদ্ধি পাবে।

তবে একটি বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখা উচিত সেটি হল অতিরিক্ত পরিমানে মধু খেলে ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া যেসব বয়স্ক মানুষরা ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগছেন,তারা অতিরিক্ত পরিমাণে মধু খাওয়ার ফলে সমস্যায় পড়তে পারেন। তাই অবশ্যই ডায়াবেটিস রোগীরা মধু খাওয়ার পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।

বাচ্চাদের মধু খাওয়ার নিয়ম

বাচ্চাদের মধু খাওয়ার নিয়ম আছে। বাচ্চাদেরকে অধিক পরিমাণে মধু খাওয়ানো ঠিক নয়। কারণ মধুতে আছে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া। যার নাম হচ্ছে ইনফ্যান্ট বোটুলিজম যা ‘ফ্লপি বেবি সিনড্রোম’’। এবং যেসব বাচ্চাদের বয়স ১২ মাস বা ১ বছরের চেয়ে কম হয়, তাদের পরিপাকতন্ত্রে এই ব্যাকটেরিয়াটি প্রবেশ করার ফলে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি করে। সুতরাং বাচ্চাদেরকে অত্যধিক পরিমাণে মধু খেতে দেওয়া একেবারেই উচিত নয়।


বাচ্চাদের মধু খাওয়ার নিয়ম

তবে যেসব বাচ্চাদের এক বছরের বেশি তারা চাইলে অল্প পরিমাণে মধু খেতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে এক বছরের বাচ্চাকে এক ড্রপ করে মধু দিয়ে শুরু করা যেতে পারে। পরে আস্তে আস্তে এর মাত্রা বয়সের সাথে বাড়ানো যাবে।

মনে রাখবেন কখনোই বাচ্চাদের গরম পানি বা গরম দুধের সাথে মধু মিশিয়ে একেবারেই দিবেন না।

তবে দুধের সাথে মধু খাওয়াতে চাইলে আপনি দুধ ঠাণ্ডা করে নিবেন। সাধারণত বাচ্চাকে খালি পেটে সকালবেলা মধু খাওয়ালে অধিক পরিমাণে উপকার পাবেন। এর পাশাপাশি বাচ্চার পেটে যদি গ্যাস দেখা দেয়, তাহলে লেবুর রসের সাথে এক ফোটা পরিমাণ মধু খাওয়াবেন। দেখবেন এসিডিটি চলে গেছে।

মধু খাওয়ার উপযুক্ত সময়

মধু খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে এতক্ষণ আলোচনা করলাম। প্রশ্ন হল মধু খাওয়ার উপযুক্ত সময় কখন? মধু খাওয়ার উপযুক্ত সময় হল সকালে এবং রাতে। আপনি যদি প্রতিদিন সকালবেলা মধু মিশিয়ে এক গ্লাস গরম পানি খান, তাহলে এই মধু আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। সারাদিন আমাদের শরীরের শক্তি প্রয়োজন হয়। আর দেহের এনার্জি লেভেল বাড়ানোর জন্য এবং সব চার্জ আপ থাকার জন্য সকাল বেলাই হলো মধু খাওয়ার জন্য একেবারে উপযুক্ত এবং সেরা সময়। সকাল বেলা মধু খেলে যা উপকার হয়:

  • দেহ থেকে অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • দেহের পরিপাকতন্ত্রের উন্নতি ঘটায়।
  • দেহকে যাবতীয় ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাল সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
  • শরীরের থেকে এলার্জির প্রতিক্রিয়া দূর করে।
  • সকালবেলা মধু খেলে তা শরীর থেকে যাবতীয় টক্সিন বের করে দেয়।
  • সারাদিনই শরীরকে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে।

সকালের পাশাপাশি মধু খাওয়ার আরেকটু উপযুক্ত সময় হলো রাত। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সাধারণত রাতে ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে মধু খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আপনি যদি প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে থাকেন এবং রাতে এক গ্লাস কুসুম গরম দুধের সাথে দুই থেকে তিন চামচ মধু মিশিয়ে খান,তাহলে আপনার ভালো ঘুম হবে। এছাড়াও রাতের বেলা মধু খেলে লিভারের কার্যকারিতা উন্নত হয়, ওজন কমে, রক্তচাপ কমে। সে হিসেবে বলাই যায় মধু খাওয়ার উপযুক্ত সময় হলো সকালে এবং রাতে।



সেক্সে মধুর উপকারিতা

পুরুষ এবং নারীদের যৌন শক্তি বৃদ্ধি করতে মধু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যৌন দুর্বলতা দূরীকরণে মধুর উপকারিতাঃ

  • মানব দেহ থেকে টেস্টোস্টেরনের নিঃসরণ ও এর কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে।
  • পুরুষের শুক্রাণুর মান উন্নত ও বৃদ্ধিতে অনেক সহায়তা করে।
  • পুরুষের যৌনাঙ্গে রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি করে।
  • মানব দেহ থেকে ইস্ট্রোজেন হরমোন নিঃসরণ বাড়ায়।
  • মানব দেহে প্রদাহ প্রতিরোধ করতে অনেক সাহায্য করে
  • দেহের ওজন কমিয়ে ইরেক্টাইল ডিসফাংশনের আশঙ্কা অনেক কমায়।

লেখকের শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলে আমি মধু খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা মধু খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই এটি শেয়ার করবে দিবেন। ধন্যবাদ।


FAQ

১) মধু খাওয়ার উপযুক্ত সময় কখন?

উত্তরঃ মধু খাওয়ার উপযুক্ত সময় হলো রাতে ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে।

২) দুধ ও মধু খাওয়ার নিয়ম কেমন?

উত্তরঃ বিশেষজ্ঞদের মতে রাতের বেলা কেউ যদি গরম দুধের সাথে মধু মিশিয়ে খায় তাহলে রাতে ভালো ঘুম হয়। দুধ ও মধু খাওয়ার নিয়ম হলো এক গ্লাস কুসুম গরম দুধের সাথে দুই থেকে তিন চামচ মধু মিশিয়ে খাওয়া।

৩) ছেলেদের মধু খাওয়ার উপকারিতা কি?

উত্তরঃ মধু খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। কোন পুরুষ যদি যৌন দুর্বলতায় ভুগে থাকে তাহলে সে মধু খেতে পারে। কারণ এটি পুরুষের যৌন দুর্বলতা দূর করতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।

৪) রাতে ঘুমানোর আগে মধু খেলে কি হয়?

উত্তরঃ রাতে ঘুমানোর আগে মধু খেলে রাতে ভালো ঘুম হয়। এর পাশাপাশি কেউ যদি রাতে লেবুর পানির সাথে মধু খেয়ে ঘুমায়, তাহলে তার দেহ থেকে চর্বি কাটতে থাকে এবং ধীরে ধীরে ওজন নিয়ন্ত্রণে আসে।

৫) সকালে খালি পেটে মধু খাওয়া যাবে কি?

উত্তরঃ হ্যাঁ অবশ্যই সকালে খালি পেটে মধু খাওয়া যাবে।

Previous Post Next Post