জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি

অবস্থান ও পরিচিতি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কোথায় অবস্থিত? 

বাংলাদেশের দ্বিতীয়  বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয় হলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকার  সাভার উপজেলায় বিশ্ববিদ্যালয়টির অবস্থিত যার আয়তন হলো প্রায় ৬৯৭.৫৬ একর। এটি বাংলাদেশের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৭০ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়৷ তবে এর কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৭২ সালে৷

 জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষদ গুলো হলোঃ

১. গাণিতিক ও পদার্থবিজ্ঞান অনুষদ

২.জীববিজ্ঞান অনুষদ

৩. ব্যাবসায় শিক্ষা ও আইন অনুষদ

৪.কলা ও মানবিক অনুষদ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এ ইউনিট (গাণিতিক ও পদার্থবিজ্ঞান অনুষদ)

এই অনুষদে শুধুমাত্র বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরাই আবেদন করতে পারে৷ একেক বছর জিপিএ-র রিকুয়ারমেন্ট একেক রকম হয়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এ ইউনিট সাবজেক্ট সংখ্যা ৮ টিঃ-

১.কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং 

২.পরিসংখ্যান বিভাগ 

৩.পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ

৪.রসায়ন বিভাগ

৫.গণিত  বিভাগ

৬.ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগ 

৭.পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ

৮. ইন্সটিটিউট অফ ইনফরমেশন অ্যান্ড টেকনোলজি বা আইআইটি

আইআইটি সাবজেক্টটি নতুন হলেও এই সাবজেক্ট এর ভবিষ্যত উজ্জ্বল। 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এ ইউনিট আসনসংখ্যাঃ-

জাহাঙ্গীরনগরে ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা আসন রয়েছে৷ এ ইউনিটে মোট আসন সংখ্যা হলো ৪১০ টি। এর মধ্যে ছেলেদের জন্য নির্ধারিত আসন সংখ্যা ২৩৫ টি এবং মেয়েদের জন্য নির্ধারিত আসন সংখ্যা হলো ১৭৫ টি৷ 

প্রতিটি সাবজেক্ট এর ছেলে ও মেয়েদের জন্য আসন বিন্যাস দেওয়া হলোঃ

১. কম্পিউটার সাইন্স  এন্ড  ইঞ্জিনিয়ারিং=৫০ টি (ছেলে-৩০ + মেয়ে-২০টি)

২.পরিসংখ্যান বিভাগ =৬৫ টি( ছেলে -৩৫ টি + মেয়ে- ৩০ টি) 

৩. গণিত বিভাগ=৭৫ টি(ছেলে-৪৫ টি+ মেয়ে-৩০ টি)

৪.পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ=৭০ টি(ছেলে -৪০+ মেয়ে -৩০)

৫.রসায়ন বিভাগ=৭০ টি( ছেলে-৪০+ মেয়ে -৩০)

৬.ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগ=৪০ টি ( ছেলে -২০+ মেয়ে-২০)

৭. পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ=৪০ টি( ছেলে-২৫+ মেয়ে-১৫)

জাহাঙ্গীরনগর  ক ইউনিটের জন্য গুরত্বপূর্ণ বই সমূহঃ

প্রথমত মেইন বই ভালোভাবে পড়তে হবে৷ মেইন বইয়ের নৈর্ব্যত্তিক অংশ বুঝে এবং বার বার প্র‍্যাক্টিস করতে হবে। এছাড়াও আরো কিছু বই র‍য়েছে যেগুলো থেকে প্র‍্যাক্টিস করতে পারেন।

১.আইসিটি বইয়ের থিওরি পার্ট ভালোভাবে পড়তে হবে।

২.ছায়ামঞ্চ বাংলা+ English 

৩.climax এর A ইউনিট এর সাপ্লিমেন্ট 

এছাড়াও ছাপ্টার ওয়াইজ কুয়েশ্চন সলভ।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি ইউনিটঃ- 

ডি ইউনিট হলো জীববিজ্ঞান বিভাগ। 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ডি ইউনিট  সাবজেক্টঃ-

১.ফার্মেসী বিভাগ

২.মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ

৩.বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ

৪.প্রাণিবিদ্যা বিভাগ

৫.উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ

৬.প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ

৭.পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগ।

ফার্মেসী, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে ভর্তি হতে হলে রসায়ন ও জীববিজ্ঞান অংশে প্রতিটিতে পৃথকভাবে ৫০% নাম্বার পেতে হবে৷ ফার্মেসী সাব্জেক্টি এই ইউনিট এর টপ সাব্জেক্ট।

আরো পড়ুন> চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতি কিভাবে নিবেন?

ডি ইউনিটের মানবণ্টনঃ

জীববিজ্ঞান অনুষদ অথবা ডি ইউনিটে শুধুমাত্র বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করতে পারবে। ডি ইউনিটের মোট নম্বর-১০০। তারমধ্যে ৮০ নম্বর এমসিকিউ ও লিখিত পরীক্ষার নম্বর বাকিটা এসএসসি ও এইচএসসির জিপিএর উপর ২০ নম্বর।

বিষয়ভিত্তিক নাম ও নম্বর

১.বাংলা ও ইংরেজী- ৮ নম্বর

২.উদ্ভিদ বিজ্ঞান-২২

৩.রসায়ন বিজ্ঞান-২৪

৪.প্রাণিবিদ্যা-২২

৫.আইকিউ-০৪

  1. পরীক্ষার সময়- ১ ঘন্টা
  2. প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২০ নাম্বার করে কেটে নেওয়া হবে। 
  3. পাশ মার্কস- ২৭
  4. বিষয়ভিত্তিক আলাদাভাবে পাশ করতে হবেনা।

জীববিজ্ঞান অনুষদের মোট আসনসংখ্যা হলো ৩২০ টি। তন্মধ্যে ছেলেদের আসন ১৬০ টি এবং মেয়েদের ১৬০ টি। 

১. ফার্মেসী বিভাগ -৫০টি(ছেলে-২৫+ মেয়ে-২৫)

২.প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিভাগ-৬০ টি(ছেলে-৩০+ মেয়ে -৩০)

৩.বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ-২৪ টি(ছেলে-১২+ মেয়ে-১২)

৪. প্রাণিবিদ্যা বিভাগ-৫০ টি(ছেলে-২৫+ মেয়ে-২৫)

৫.মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ-৩৬ ( ছেলে-১৮+মেয়ে-১৮)

৬.উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ-৬০ টি(ছেলে-৩০+ মেয়ে-৩০)

৭.পাবলিক হেলথ এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ-৪০ টি (ছেলে-২০+মেয়ে-২০)

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইট ঃ- https://juniv-admission.org/

গাণিতিক ও পদার্থবিজ্ঞান অনুষদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ টপিকঃ

ইংরেজিঃ

১.Right form of verb এর সকল নিয়ম।  তবে বিগত বছরের প্রশ্ন দেখে গুরত্বপূর্ণ রুলস গুলো দেখতে হবে।

২.part of speech

৩. Preposition ****

৪.tense 

৫.conditional sentence 

৬.synonyms and antonyms 

৭. phrase and idiom 

main বইয়ের passage  

থেকে word meaning শিখে নিতে হবে।

বাংলাঃ

বাংলা থেকে A ইউনিটে ৩ টি প্রশ্ন করা হয়৷ ব্যাকরণ হতে বেশি করা হয়ে থাকে।

তবে মূল বইয়ের গল্প কবিতা পড়ে রাখতে হবে।

ব্যাকরণ এর গুরত্বপূর্ণ অংশঃ

১.সন্ধিঃ নিপাতনে সিদ্ধ সন্ধি এবং ব্যতিক্রমী নিয়ম পড়তে হবে।

২.সমাসঃদ্বিগু সমাস এবং সংখ্যাবাচক অংশ সমূহ পড়তে হবে।

৩.প্রত্যয়

৪.ধ্বনি 

৫.শব্দ ভাণ্ডার 

বিশেষ করে আরবি ফারসি শব্দ দেখতে হবে। 

৬.সমার্থক শব্দ

৭.বিপরীত শব্দ

৮. পারিভাষিক শব্দ

এছাড়াও নবম-দশম শ্রেণির পুরাতন বই থেকে টপিক গুলো দেখতে হবে।

পদার্থবিজ্ঞানঃ

ইসহাক স্যার এর বই থেকে নৈর্ব্যত্তিক গুলো ভালোভাবে বুঝে পড়তে হবে৷ 

কিছু ইম্পর্ট্যান্ট টপিক যেগুলো থেকে অনেক বেশি প্রশ্ন করা হয়ঃ- 

ভেক্টর এর পরিচিতি যেমন নাল ভেক্টর, বিপ্রতীপ ভেক্টর, ভেক্টরের ডট গুণন, ক্রস গুণন, ভেক্টরদ্বয় লম্ব এবং সমান্তরাল হওয়ার শর্ত, নির্দিষ্ট বিন্দুতে ডাইভারজেন্স বের করা, rms বেগ, তুল্যরোধ, ধারকত্ব, এম্পিয়ারের সূত্র,  তড়িৎ চুম্বকীয় আবেশ,

আবিষ্ট ততড়িচ্চালক বল,মুক্তিবেগ ইত্যাদি। 

সকল অধ্যায়ের মাত্রা ও একক পড়তে হবে। বিশেষ করে কাজ,  শক্তি,  বল ইত্যাদির মাত্রা ভালো ভাবে পরতে হবে।

পদার্থবিজ্ঞান এর সূত্রসমূহ খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ বারবার সূত্র পড়তে হবে। ছোটো ম্যাথ করতে হবে৷ যেহেতু ক্যালকুলেটর ব্যাবহার করতে দেওয়া হয়না তাই হাতে ক্যালকুলেশন প্র‍্যাক্টিস করতে হবে।

রসায়নঃ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন প্রশ্ন ম্যাথ থেকে কম আসে। কিন্তু থিওরি প্রশ্ন গুলো খুবই কনফিউজিং হয়ে থাকে৷ এজন্য মেইন বইয়ের থিওরি গুলো ভালোভাবে শেষ করতে হবে৷ হাজারী নাগ স্যারের বইয়ের নৈর্ব্যত্তিক গুলো সলভ করতে হবে।

কিছু ইম্পর্ট্যান্ট টপিকঃ

আইসোটোপ,  আইসোটন, আইসোবার, রাডারফোর্ড এর পরীক্ষা**, ইলেক্ট্রন আসক্তি এবং আয়নিকরণ শক্তির ব্যাতিক্রম মৌলসমূহ,হাইড্রোজেন বন্ধন, **ফাজানের নীতি, বাফার দ্রবণ**, অনুবন্ধী এসিড ও অনুবন্ধী ক্ষার, অর্থো প্যারা মেটা নির্দেশক,  ইউপেক নামকরণ**, ইলেক্ট্রোফাইল, নিউক্লিওফাইল, আলোক সমাণুতা, বিভিন্ন সমানুতার উদাহরণ।

বিভিন্ন নামকরণ বিক্রিয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  এর মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গিগনার্ড বিকারক বারবার রিপিট হতে দেখা গেছে। 

এছাড়াও আয়োডোফর্ম পরীক্ষা, টলেন বিকারক, ফেহলিং দ্রবণ, ক্লিমেনসন বিজারণ, হফম্যান ডিগ্রেডেশন বিক্রিয়া,  ১°,২° এবং ৩° alcohol শশনাক্তকরণ  ইত্যাদি পড়তে হবে। 

এছাড়াও পরিমাণগত রসায়ন  থেকে প্রাইমারি স্ট্যান্ডার্ট পদার্থ, মোলারিটি, ppm,তরল গ্যাসীয় এবং কঠিন বিজারক ইত্যাদি। 

তড়িৎ রসায়ন হতে ড্রাই সেল, ফুয়েল সেল, সবল দূর্বল তড়িৎ বিশ্লেষ্য,  ধাতুর সক্রিয়তা সিরিজ,  মৌলিক কোষ ইত্যাদি। 

ম্যাথ সাজেশনঃ

ইন্টারের গণিত  বইয়ের গুরত্বপূর্ণ টাইপগুলো প্র‍্যাক্টিস করতে হবে। কোন টাইপগুলো গুরত্বপূর্ণ তার জন্য একটি প্রশ্নব্যাংক কিনা আবশ্যক। যেহেতু ক্যালকুলেটর ইউজ করতে দেওয়া হয়না তাই জটিল ম্যাথ গুলো দেওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু সহজ ম্যাথ গুলোর উত্তর কনফিউজিং থাকবে। 

কিছু গুরুত্বপূর্ণ টাইপ গুলো হলোঃ

সমান্তরাল ও লম্ব ভেক্টর হওয়ার শর্ত, বিপরীত ম্যাট্রিক্স, ম্যাট্রিক্সের ক্রম, ভেক্টরদ্বয়ের মধ্যবর্তী কোণ নির্ণয়, কার্তেসীয় স্থানাংক, মূল বিন্দু হতে দূরত্ব,  ঢাল এবং নতি বের করা, সমরেখ হওয়ার শর্ত,  সঞ্চারপথের সমীকরণ, স্পর্শকের দৈর্ঘ্য,  পরিকেন্দ্র,  জ্যা এর ঢাল,ত্রিকোণমিতিক অনুপাত, সূত্রাবলী,  অন্তরীকরণ হতে ঢাল, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মান, লা হসপিটাল রুল, ইন্ট্রিগ্রেশন হতে ক্ষেত্রফলের শর্টকাট নিয়ম, dy/dx নির্ণয়। 

এছাড়াও পরমমান সংক্রান্ত অসমতা, অবাস্তব মূলের গুনফল,  আর্গুমেন্ট,  নিম্নসীমা,  উর্ধ্বসীমা, বহুপদীর মূলগুলো সমান হওয়ার শর্ত, মূলগুলো জটিল,  পূর্ণবর্গ ইত্যাদি হওয়ার শর্ত।

দ্বিপদী বিস্তৃতি হতে x বর্জিত পদ, মধ্যপদ ইত্যাদি।  কণিক হতে উৎকেন্দ্রিকতা, পরাবৃত্ত,  উপবৃত্ত দ্বারা আবদ্ধ ক্ষেত্রফল  বের করার শর্টকার্ট নিয়ম জানতে হবে।

পড়ার বাইরের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ

মনে রাখবেন শুধু পড়লেই হবে না। অনেক শিক্ষার্থী আছে ঘন্টার পর ঘন্টা পড়ার পরও চান্স হয় না। এর মূল কারণ হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো না জানা। অতিরিক্ত টেনশন, ভয়, ঘুম কম হওয়া। আপনি যদি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেতে চান তাহলে ধৈর্যশীল এবং আত্মবিশ্বাসী হন। রুটিন করে পড়ুন। তাহলে আপনার চান্স হয়ে যাবে। 

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো অবশ্যই আপনাকে বেশি বেশি পরীক্ষা দিতে হবে। কম সময়ে ম্যাথ সল্ভ করতে হবে। পাশাপাশি প্রশ্নব্যাংক অবশ্যই দেখতে হবে। 

আপনার জন্য রইলো শুভকামনা। 

ধন্যবাদ!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *