চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি তথ্য ও প্রস্তুতি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি তথ্য

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি তথ্য

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়? 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৬৬ সালের ১৮ নভেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয়।

চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার উত্তরে হাটহাজারী উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নে অবস্থিত একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এর বর্তমান আয়তন ২১০০ একর। যা বাংলাদেশে সর্ববৃহৎ। 

চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (ক) ইউনিট ভর্তি প্রস্তুতি নিয়ে তথ্যঃ-  

এখানে সেকেন্ড টাইম নেই(২০২১ পর্যন্ত), প্রতিটি প্রশ্নের মান ১। নেগেটিভ মার্কিং রয়েছে। সিট সংখ্যা ১২০০।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক ইউনিট ভর্তি প্রস্তুতি :-

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন,  গণিত, জীববিজ্ঞান,  বাংলা এবং ইংরেজি থেকে প্রশ্ন করা হয়ে থাকে।

মানবন্টনঃ

  • বাংলা-১০ টি প্রশ্ন 
  • ইংরেজি-১৫ টি প্রশ্ন
  • পদার্থবিজ্ঞান-২৫টি প্রশ্ন
  • রসায়ন-২৫টি প্রশ্ন
  • জীববিজ্ঞান-২৫টি প্রশ্ন
  • গণিত-২৫টি প্রশ্ন

আলাদা পাশ মার্কঃ

(১)বাংলা-৩ পেতেই হবে

(২)ইংরেজি-৪ 

(৩)পদার্থবিজ্ঞান-৮ 

(৪)রসায়ন-৮ 

(৫)জীববিজ্ঞান-৮

(৬)গণিত-৮

একজন শিক্ষার্থীকে বাংলা, ইংরেজি,  পদার্থবিজ্ঞান,  রসায়ন অবশ্যই উত্তর করতে হবে৷ জীববিজ্ঞান বা গণিত এর মধ্যে যেকোনো একটির উত্তর করতে হবে। এবং নূন্যতম পাশ মার্ক পেতে  হবে। তা নাহলে সে অকৃতকার্য বলে বিবেচিত হবে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইট ঃ- https://admission.cu.ac.bd/

বিষয় ভিত্তিক প্রস্তুতিঃ

বাংলা

বাংলা অবশ্যই লেখক পরিচিতি পড়তে হবে৷ সিলেবাস এর অন্তর্ভুক্ত গদ্য বা পদ্য সমূহের লেখক এবং শব্দার্থ  দেখে যেতে হবে। আরো কিছু ইম্পর্ট্যান্ট টপিকঃ

1.কোন কবিতা কোন ছন্দে রচিত 

2.কোন কবিতা কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে রচিত।

3.কবিতার লাইন বা কবিতা চিহ্নিত করা।

4.নাটকের অঙ্ক সংখ্যা  এবং নাটকের প্রধান চরিত্রের ব্যাখ্যা। 

5.উপন্যাসের মূল কাহিনী।

6.সহপাঠ বইয়ের সাহিত্যের ইতিহাস। 

7.কবিতা বা গদ্যে পাখি বা নদীর নাম 

এর সাথে যেসব কবি বা সাহিত্যিক এর লেখক পরিচিতি পড়তে হবেঃ-

১.সেলিনা হোসেন

২. সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ

৩.কাজী নজরুল ইসলাম 

৪. ররবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৫.মোতাহের হোসেন চৌধুরী 

৬. জীবনানন্দ দাশ

৭.মানিক বন্দোপাধ্যায়

তাদের ছদ্মনাম এবং জন্মস্থান পড়তে হবে৷ কোন লেখক কোন নাটক বা উপন্যাস বা কাব্যগ্রন্থ রচিত করেছেন সেটি ভালোভাবে পড়তে হবে। 

 ব্যাকরণ অংশের জন্য নবম-দশম শ্রেণীর পুরাতন বই ভালোভাবে পড়লেই ইনশাআল্লাহ কমন পাবে।

 ব্যাকরণ অংশ

১. সমাস***

২.ধ্বনি 

৩.সন্ধি 

৪.প্রত্যয়****

 এর ব্যতিক্রম এর নিয়মগুলো বেশি করে দেখে যাবেন৷ সন্ধির মধ্যে নিপাতনে সিদ্ধ সন্ধি ভালোভাবে পড়ে যাবেন। 

৫.সমার্থক শব্দ 

৬.বিপরীত শব্দ

 ৭.বাগধারা 

৮.শব্দ ভাণ্ডার ***

৯.উপসর্গ এবং অনুসর্গ

১০.পারিভাষিক শব্দ 

ইংরেজি

ইংরেজির জন্য Barron’s and Cliffis Toffl বইগুলো থেকে

1.tense 

2.right form of verb

3.part of speech 

 Noun

 Pronoun

 Adjective 

 Adverb

 Verb

 Preposition 

4. Wh question and tag question 

5. Phrase and idiom 

6.synnonym and antonym

7.conditional sentence 

8. Gerund, participle and Infinity  9. 9. Group verb 

এগুলোর প্রেক্টিস করতে হবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বিগত বছরের প্রশ্ন থেকে অনেক প্রশ্ন রিপিট হয়৷ তাই সবার আগে বিগত বছরের প্রশ্ন সল্ভ করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

পদার্থবিজ্ঞান

পদার্থবিজ্ঞানের জন্য থিওরি একটু বেশি জোর দিবেন। ইসহাক স্যার এর বইয়ের বক্স করা অংশ গুলো অবশ্যই পড়তে হবে। এছাড়াও বিগত বছরের প্রশ্ন পড়বেন। মূল বইয়ের কিছু কমন  টপিক যেমন-লব্ধি ভেক্টর,  নাল ভেক্টর,  লব্ধি বল,প্রাস, মুক্তিবেগ, rms বেগ, সরল ছন্দিত স্পন্দন, রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়া,  সরন, তুল্যরোধ,ধারকত্ব, কুলম্বের সূত্র,  তড়িৎ ক্ষেত্রের প্রাবল্য,  প্রত্যাবর্তী ও অপ্রত্যাবর্তী প্রক্রিয়ার উদাহরণ, এম্পিয়ারের সূত্র,  বায়োস্যাভাট সূত্র, তড়িৎ চৌম্বকীয় আবেশ, আবিষ্ট তড়িচ্চলক বল  এগুলো ভালোভাবে পড়তে হবে। 

এছাড়াও সকল অধ্যায়ের মাত্রা এবং একক পড়তে হবে। বিভিন্ন তত্তের জনক এর নাম মুখস্ত রাখতে হবে৷ 

গাণিতিক প্রশ্নের জন্য মূল বইয়ের ছোট ম্যাথ গুলো করতে হবে। 

*** পদার্থবিজ্ঞানে ভালো করতে হলে সুত্র সমূহ ভালোভাবে আয়ত্ত করতে হবে।

রসায়ন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়নে ম্যাথ টাইপ প্রশ্ন থেকে থিওরি টাইপ প্রশ্ন বেশি দেওয়া হয়। এজন্য মূল বইয়ের রিডিং পড়ার বিকল্প নাই। এছাড়াও কেমিস্ট্রি প্লাস বইটির মাধ্যমে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশ্নের প্যাটার্ন সম্পর্কে ধারণা পাবেন। রসায়নের কিছু ইম্পর্ট্যান্ট টপিকঃ

শিখা পরীক্ষা, রাদারফোর্ড এর আলফা কণা পরীক্ষা,বোর পরমাণু মডেল,আইসোটোপ, আইসোবার,আইসোটোন,অধক্ষেপ, দ্রাব্যতার ছোট ম্যাথ, পর্যায়বৃত্ত ধর্ম যেমন- আয়নিকরন শক্তি,  ইলেকট্রন আসক্তি, গলনাঙ্ক,,স্ফুটনাংক এবং এগুলোর ব্যাতিক্রম, ***ফাজানের নীতি , অবস্থান্তর মৌল,  হাইড্রোজেন বন্ধন, pH এর ম্যাথ, সংকরায়ন,ব্যাতিক্রমী ইলেকট্রন বিন্যাস, বাফার দ্রবণ ইত্যাদি। 

রসায়ন  দ্বিতীয় পত্র হতে অনুবন্ধী এসিড, অনুবন্ধী ক্ষার, ব্রনস্টেড লাওরী মতবাদ,  আরহেনিয়াস মতবাদ, লুইস ক্ষার এবং এসিড, ইউপেক নামকরণ,অর্থো প্যারা মেটা নির্দেশক,  সক্রিয়তা,  কার্বানায়ন,  কার্বাক্যাটায়ন, ইলেক্ট্রোফাইল,নিউক্লিওফাইল, কাইরাল কর্বন বা আলোক সমানুতা, জ্যামিতিক সমানুতা, বিভিন্ন সমানুতা যেমন টটোমারিজম ইত্যাদি।  

বিভিন্ন নামকরণ বিক্রিয়া – বেয়ার পরীক্ষা, ব্রোমিন দ্রবণ পরীক্ষা, হফম্যান ক্ষুদ্রাংশকরণ পরীক্ষা,  ক্লিমেনসন বিজারণ, ফেহলিং দ্রবণ পরীক্ষা,

 আয়োডফর্ম পরীক্ষা, টলেন বিকারক পরীক্ষা,হ্যালোফর্ম পরীক্ষা, হফম্যান ডিগ্রেডেশন বিক্রিয়া, ক্ষারকত্ব কম বেশি, গিগনার্ড বিকারক, অ্যালকোহল শনাক্তকরণ ইত্যাদি। 

এছাড়াও কাঁদুনে গ্যাস, ফরমালিন, ইথানল,গ্যামাক্সিন, ক্লোরোপিক্রিন।

পরিমাণগত রসায়নঃপ্রাইমারি স্ট্যান্ডার্ড পদার্থ, ব্যাতিক্রমধর্মী জারণমান, মোলারিটি, ppm, টাইট্রেশনে উপযুক্ত নির্দেশক,কঠিন,  তরল, গ্যাসীয় জারক এবং বিজারক ইত্যাদি। 

তড়িৎ রসায়ন হতে সবল এবং দূর্বল তড়িৎ বিশ্লেষ্য,  ড্রাই সেলে তড়িৎ বিশ্লেষ্য, লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি, মৌলিক কোষ এবং সঞ্চয়ী কোষ ইত্যাদি। 

অর্থনৈতিক রসায়ন হতে-

ওয়াটার গ্যাস, প্রোডিওসার গ্যাস এর সংকেত, ইউরিয়া সারের সংকেত,হোয়াইট অ্যাশ, ব্ল্যাক অ্যাশ, কার্ণালাইটের সংকেত ইত্যাদি খুব মনযোগ দিয়ে পড়তে হবে৷ 

ম্যাথ সাজেশন

ম্যাটিক্সঃ

বিপরীত ম্যট্রিক্স, নির্ণায়ক,ম্যাট্রিক্সের ট্রেস,অভেদক ম্যাট্রিক্স, ম্যাট্রিক্সের ক্রম ইত্যাদি । 

ভেক্টরঃ

কত হলে লম্ব হবে অর্থাৎ লম্ব ও সমান্তরাল হওয়ার শর্ত, একই সমতলে থাকার শর্ত, লম্ব অভিক্ষেপ,  মধ্যবর্তী কোণ নির্ণয়, অক্ষের দিকের সাথে কত ডিগ্রি কোণ তৈরী করে ইত্যাদি। 

সরলরেখাঃ

পোলার স্থানঙ্ক, কার্তেসীয় স্থানাঙ্ক,দুটি সরলরেখার অন্তর্ভুক্ত কোণ, মূল বিন্দু হতে দূরত্ব, ঢাল বের করা, কত হলে ঢালদ্বয় পরস্পর লম্ব হবে,সমরেখ হওয়ার শর্ত,লম্ব দূরত্ব, ত্রিভূজের ক্ষেত্রফল,  প্রতিবিম্ব, সঞ্চারপথের সমীকরণ ইত্যাদি 

বৃত্তঃ

বৃত্ত হওয়ার শর্ত,স্পর্শকের দৈর্ঘ্য, পরিকেন্দ্র,  জ্যা এর ঢাল,বৃত্তের ব্যাসার্ধ, 

বৃত্তের সাপেক্ষে মূল বিন্দুর অবস্থান ইত্যাদি 

এছাড়াও বিন্যাস ও সমাবেশ থেকে কতভাবে সাজানো যায় এই সংক্রান্ত ম্যাথ,  সূত্রাবলী, ত্রিকোণমিতিক অনুপাত থেকে বিভিন্ন কোনের মান,পর্যায়, অন্তরীকরণ হতে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মান,স্পর্শকের ঢাল, লা হসপিটাল রুল, dy/dx এ নির্ণয়,  ইন্ট্রিগ্রেশন হতে ক্ষেত্রফলের শর্টকাট নিয়ম ইত্যাদি।

এছাড়াও উচ্চতর গণিত দ্বিতীয় পত্রের হতে পরমমান সংক্রান্ত অসমতা,  সেটের উপসেট,  উধর্ধসীমা, নিম্নসীমা, জটিল সংখ্যার মান, বাস্তব ও কাল্পনিক অংশের সমষ্টি,বর্গমূল,অবাস্তব মূলের গুণফল, আর্গুমেন্ট নির্ণয়, বহুপদী হতে একটি মূল দেওয়া থাকলে সমীকরণের যেকোনো চলের মান বের করা, সমীকরণের মূলগুলো সমান হলে শর্ত,মূলগুলো বাস্তব,  জটিল,  পূর্ণবর্গ ইত্যাদি হওয়ার শর্ত সমূহ।

কোনো মূল দেওয়া থাকলে দ্বিগুণ মূলবিশিষ্ট সমীকরণ নির্ণয়,  বিস্তৃতি হতে মধ্যপদ,  পদ সংখ্যা কয়টি,x বর্জিত পদ,

কণিক হতে উপবৃত্তের কেন্দ্র,  পরাবৃত্তের কেন্দ্র, শীর্ষ বিন্দু, লম্বের দৈর্ঘ্য, বৃহৎ অক্ষ, ক্ষুদ্র অক্ষ, পরাবৃত্ত,  উপবৃত্ত, অধিবৃত্ত এগুলো দ্বারা আবদ্ধ ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল, এগুলোর উৎকেন্দ্রিকতার মান ইত্যাদি।  এছাড়াও বিগত বছরের প্রশ্ন দেখে যেতে হবে।

উপরে যেই বিষয়গুলো এবং টপিকগুলো বলা হয়েছে সেগুলো আয়ত্ত করতে পারলে আপনি ইনশাআল্লাহ চান্স পেয়ে যাবেন, এটি আমার দৃঢ় বিশ্বাস। তাই সময় নষ্ট না করে পড়তে থাকুন। মনে রাখবেন সফলতা পেতে হলে অবশ্যই আপনাকে চেষ্টা করে যেতে হবে এবং কঠোর পরিশ্রম করার মানসিকতা থাকতে হবে। চিন্তামুক্ত ফ্রেশ মস্তিষ্ক নিয়ে পড়তে বসবেন। সফলতা পাবেন৷  

আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো বারবার পরীক্ষা দিবেন। চেষ্টা করবেন সময়ের আগেই সব উত্তর দেওয়ার। 

ক্যালকুলেশনে দক্ষ হতে হবে আপনাকে। ক্যালকুলেটর ছাড়া দ্রুত ম্যাথ করার চেষ্টা করুন। 

এই বিষয়গুলো আমলে নিলে আপনার চান্স হয়ে যাবে। 

ধন্যবাদ!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *