বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতার MCQ
বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতার মূলভাব
‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কাব্যাংশটুকু মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘মেঘনাদবধ-কাব্যে’-র ‘বধো’ (বধ) নামক ষষ্ঠ সর্গ থেকে সংকলিত হয়েছে। সর্বমোট নয়টি সর্গে বিন্যস্ত ‘মেঘনাদবধ-কাব্যে’র ষষ্ঠ সর্গে লক্ষণের হাতে অন্যায় যুদ্ধে মৃত্যু ঘটে অসীম সাহসী বীর মেঘনাদের। রামচন্দ্র কর্তৃক দ্বীপরাজ্য স্বর্ণলঙ্কা আক্রান্ত হলে রাজা রাবণ শত্রুর উপর্যুপরি দৈব-কৌশলের কাছে অসহায় হয়ে পড়েন। ভ্রাতা কুম্ভকর্ণ ও পুত্র বীরবাহুর মৃত্যুর পর মেঘনাদকে পিতা রাবণ পরবর্তী দিবসে অনুষ্ঠেয় মহাযুদ্ধের সেনাপতি হিসেবে বরণ করে নেন। যুদ্ধজয় নিশ্চিত করার জন্য মেঘনাদ যুদ্ধযাত্রার পূর্বেই নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে ইষ্টদেবতা অগ্নিদেবের পূজা সম্পন্ন করতে মনস্থির করে। মায়া দেবীর আনুকূল্যে এবং রাবণের অনুজ বিভীষণের সহায়তায়, লক্ষণ শত শত প্রহরীর চোখ ফাঁকি দিয়ে নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে প্রবেশে সমর্থ হয়। কপট লক্ষণ নিরস্ত্র মেঘনাদের কাছে যুদ্ধ প্রার্থনা করলে মেঘনাদ বিস্ময় প্রকাশ করে। শত শত প্রহরীর চোখ ফাঁকি দিয়ে নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে লক্ষণের অনুপ্রবেশ যে মায়াবলে সম্পন্ন হয়েছে, বুঝতে বিলম্ব ঘটে না তার। ইতোমধ্যে লক্ষণ তলোয়ার কোষমুক্ত করলে মেঘনাদ যুদ্ধসাজ গ্রহণের জন্য সময় প্রার্থনা করে লক্ষণের কাছে। কিন্তু লক্ষণ তাকে সময় না দিয়ে আক্রমণ করে। এ সময়ই অকস্মাৎ যজ্ঞাগারের প্রবেশদ্বারের দিকে চোখ পড়ে মেঘনাদের; দেখতে পায় বীরযোদ্ধা পিতৃব্য বিভীষণকে। মুহূর্তে সবকিছু স্পষ্ট হয়ে যায় তার কাছে। খুললতাত বিভীষণকে প্রত্যক্ষ করে দেশপ্রেমিক নিরস্ত্র মেঘনাদ যে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে, সেই নাটকীয় ভাষ্যই ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ অংশে সংকলিত হয়েছে। এ অংশে মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসা এবং বিশ্বাসঘাতকতা ও দেশদ্রোহিতার বিরুদ্ধে প্রকাশিত হয়েছে ঘৃণা। জ্ঞাতিত্ব, ভ্রাতৃত্ব ও জাতিসত্তার সংহতির গুরুত্বের কথা যেমন এখানে ব্যক্ত হয়েছে তেমনি এর বিরুদ্ধে পরিচালিত ষড়যন্ত্রকে অভিহিত করা হয়েছে নীচতা ও বর্বরতা বলে।
উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরণের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তান মাইকেল মধুসূদন দত্ত বাল্মীকি-রামায়ণকে নবমূল্য দান করেছেন এ কাব্যে। মানবকেন্দ্রিকতাই রেনেসাঁস বা নবজাগরণের সারকথা। ঐ নবজাগরণের প্রেরণাতেই রামায়ণের রাম-লক্ষণ মধুসূদনের লেখনীতে হীনরূপে এবং রাক্ষসরাজ রাবণ ও তার পুত্র মেঘনাদ যাবতীয় মানবীয় গুণের ধারকরূপে উপস্থাপিত। দেবতাদের আনুকূল্যপ্রাপ্ত রাম-লক্ষণ নয়, পুরাণের রাক্ষসরাজ রাবণ ও তার পুত্র মেঘনাদের প্রতিই মধুসূদনের মমতা ও শ্রদ্ধা।
‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ‘ কাব্যাংশটি ১৪ মাত্রার অমিল প্রবহমান যতিস্বাধীন অক্ষরবৃত্ত ছন্দে রচিত। প্রথম পঙ্ক্তির সঙ্গে দ্বিতীয় পক্তির চরণান্তের মিলহীনতার কারণে এ ছন্দ ‘অমিত্রাক্ষর ছন্দ’ নামে সমধিক পরিচিত। এ কাব্যাংশের প্রতিটি পঙ্ক্তি ১৪ মাত্রায় এবং ৮ + ৬ মাত্রার দুটি পর্বে বিন্যস্ত। লক্ষ করার বিষয় যে, এখানে দুই পঙ্ক্তির চরণান্তিক মিলই কেবল পরিহার করা হয়নি, যতিপাত বা বিরামচিহ্নের স্বাধীন ব্যবহারও হয়েছে বিষয় বা বক্তব্যের অর্থের অনুষঙ্গে। এ কারণে ভাবপ্রকাশের প্রবহমানতাও কাব্যাংশটির ছন্দের বিশেষ লক্ষণ হিসেবে বিবেচ্য।
বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতার MCQ
১. লক্ষ্মণ কোথায় প্রবেশ করলেন?
উত্তর: রক্ষঃপুরে
২. রক্ষঃপুরে কে প্রবেশ করলেন?
উত্তর: লক্ষ্মণ
৩. নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে পশিল কে?
উত্তর: লক্ষ্মণ
৪. নিকষা সতী কার জননী?
উত্তর: বিভীষণের
৫. বিভীষণের সহোদর কে?
উত্তর: রাবণ
৬. বিভীষণ মেঘনাদের কী হন?
উত্তর: কাকা
৭. মেঘনাদ কোথায় যেতে চেয়েছেন?
উত্তর: অস্ত্রাগারে
৮. রামানুজকে মেঘনাদ কোথায় পাঠাতে চেয়েছেন?
উত্তর: শমন-ভবনে
৯. বিভীষণ নিজেকে কী বলে উল্লেখ করেছেন?
উত্তর: রাঘবদাস
১০. বিভীষণের বাক্য শুনে মেঘনাদের কী ইচ্ছে হয়েছে?
উত্তর: মারিবার
আরো পড়ুন: সোনার তরী কবিতার MCQ
বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতার MCQ
১১. স্থাণুর ললাটে বিধি কাকে স্থাপন করেছেন?
উত্তর: বিধুকে
১২. মৃগেন্দ্রকেশরী কাকে মিত্রভাবে সম্ভাষে না?
উত্তর: শৃগালকে
১৩. মেঘনাদ কাকে ‘বিজ্ঞতম’ বলেছেন?
উত্তর: বিভীষণকে
১৪. মেঘনাদ কাকে ‘অজ্ঞ’ বলেছেন?
উত্তর: নিজেকে
১৫. মেঘনাদের মতে, লক্ষ্মণের আচরণ দেখে লঙ্কার কে হাসবে?
উত্তর: শিশু
১৬. ‘ছাড়হ পথ’ কাকে বলা হয়েছে?
উত্তর: বিভীষণকে
১৭. দেব-দৈত্য-নর রণে বিভীষণ স্বচক্ষে কার পরাক্রম দেখেছেন?
উত্তর: মেঘনাদের
১৮. মেঘনাদের দৃষ্টিতে নন্দন-কাননে কে ভ্রমণ করেছে?
উত্তর: দৈত্য
১৯. মেঘনাদের দৃষ্টিতে প্রফুল্ল কমলে কী বাস করেছে?
উত্তর: কীট
২০. মলিনবদন লাজে কে উত্তর দিয়েছিলেন?
উত্তর: রাঘব-অনুজ
বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতার MCQ
২১. ‘নহি দোষী আমি’ – কে বলেছেন?
উত্তর: বিভীষণ
২২. পাপপূর্ণ বলা হয়েছে কোনটিকে?
উত্তর: লঙ্কাপুরী
২৩. কাল সলিলে ডুবেছে কোনটি?
উত্তর: লঙ্কা
২৪. নিশীথে অন্বরে মন্দ্রে কোনটি?
উত্তর: জীমূতেন্দ্র
২৫. নির্গুণ হলেও কে শ্রেয়?
উত্তর: স্বজন
২৬. ‘বাসববিজয়ী’ বলা হয়েছে কাকে?
উত্তর: মেঘনাদকে
২৭. বিভীষণের কথা শুনে মেঘনাদের মরতে ইচ্ছে হয়েছিল কেন?
উত্তর: আপনজনের বিশ্বাসঘাতকতা দেখে
২৮. ‘হে বীরকেশরী’ বলে কাকে নির্দেশ করা হয়েছে?
উত্তর: বিভীষণকে
২৯. লক্ষ্মণকে ক্ষুদ্রমতি নর বলার কারণ কী?
উত্তর: অস্ত্রহীনকে যুদ্ধে আহ্বান করায়
৩০. মেঘনাদ লক্ষ্মণকে ‘দুর্বল মানব’ কেন বলেছেন?
উত্তর: নিরস্ত্রকে আক্রমণ করতে এসেছে বলে
বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতার বহুনির্বাচনি প্রশ্ন উত্তর
৩১. ‘মহারথি প্রথা’ নয় কোনটি?
উত্তর: অস্ত্রহীনকে যুদ্ধে আহ্বান
৩২. ‘ডরিবে এ দাস হেন দুর্বল মানবে?’- এখানে ‘দুর্বল মানব’ কেন?
উত্তর: লক্ষ্মণ
৩৩. ‘নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে প্রগলভে পশিল দম্ভী’-এখানে ‘দম্ভী’ বলে কাকে বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: মেঘনাদকে
৩৪. ‘দুরাচার দৈত্য’ বলে কাকে নির্দেশ করা হয়েছে?
উত্তর: লক্ষ্মণকে
৩৫. ‘রাবণ-অনুজ’ বলে কাকে বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: বিভীষণকে
৩৬. ‘রাবণ-আত্মজ’ শব্দটি কার সম্পর্কে ব্যবহৃত হয়েছে?
উত্তর: মেঘনাদ
৩৭. বিভীষণ রাজা বলতে কাকে বুঝিয়েছে?
উত্তর: রাবণকে
৩৮. লঙ্কার দুরবস্থার জন্য বিভীষণ কোন বিষয়টিকে দায়ী করেছেন?
উত্তর: রাবণের যুদ্ধনীতিকে
৩৯. বিভীষণের বিমাতাসুলভ আচরণের জন্য মেঘনাদ কোন বিষয়টিকে দায়ী করেছেন?
উত্তর: সঙ্গদোষ
৪০. ‘বাসবত্রাস’ বলে কাকে বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: মেঘনাদকে
বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতার MCQ
৪১.’বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতায় ‘ক্ষুদ্রমতি নর’ কে?
উত্তর: লক্ষ্মণ
৪২. বাসবত্রাস কে?
উত্তর: মেঘনাদ
৪৩. হিন্দু কলেজের ছাত্রাবস্থায় মাইকেল মধুসুদনের সাহিত্যচর্চার মাধ্যম কী ছিল?
উত্তর: ইংরেজি
৪৪. ‘দুরাচার দৈত্য’ কাকে বলে হয়েছে?
উত্তর: লক্ষ্মণ
৪৫. ‘এতক্ষণে অরিন্দম কহিলা বিষাদে’- অরিন্দমের বিধানের কারণ কী?
উত্তর: বিভীষণের বিশ্বাসঘাতকতা
৪৬. বিভীষণের মায়ের নাম কী?
উত্তর: নিকষা
৪৭. কোন কবি আধুনিক বাংলা নাটকের প্রথম রচয়িতা?
উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত
৪৮. চণ্ডালে বসাও আনি রাজার আলয়ে – পঙ্ক্তিটির মধ্য দিয়ে কোন ভাব সর্বাধিক জোরালো হয়েছে?
উত্তর: ঘৃণা
৪৯. মধুসুদন দত্ত প্রবর্তিত ছন্দের নাম কী?
উত্তর: অমিত্রাক্ষর
৫০. কবিতায় শৃগাল বলা হয়েছে
উত্তর: লক্ষ্মণকে
বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতার MCQ
৫১. আধুনিক বাংলা সাহিত্যের জনক কে?
উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত
৫২. লক্ষ্মণ ক্ষুদ্রমতি নর কেন?
উত্তর: যুদ্ধের নিয়ম ভঙ্গ করায়
৫৩. বিভীষণের প্রতি মেঘমাদ কাব্যে তাত শব্দের প্রকৃত অর্থ কি?
উত্তর:- চাচা
৫৪. মাইকেল মধুসূদন দত্তের প্রহসন কোনটি?
উত্তর: একেই কি বলে সভ্যতা
৫৫. মেঘনাদের মরে যেতে ইচ্ছা করে কেন?
উত্তর: বিভীষণের কথা শুনে
৫৬. আহবে অর্থ কি?
উত্তর: যুদ্ধে
৫৭. মেঘনাদবধ কাব্যটি কত সালে প্রকাশিত হয়?
উত্তর: ১৮৬১ সালে
৫৮. বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতার চরণ আছে কতটি?
উত্তর: ৭২ টি
৫৯. সনেটের প্রবর্তক কে?
উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত
৬০. মাইকেল মধুসূদন দত্ত কত খ্রিষ্টাব্দে খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করেন?
উত্তর: ১৯৪৩ সালে